এনবিআর সংস্কার: ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু একটা হবে

অর্থ উপদেষ্টা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুভাগ করার উদ্যোগ অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ। বুধবার (৬ আগস্ট) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আর্থিক খাতের সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক কতগুলো জিনিস আমরা করে ফেলেছি। কতগুলো (সংস্কার) আছে মধ্যমেয়াদী, কতগুলো দীর্ঘমেয়াদী। যেমন-ব্যাংক রেজুলেশন, এতে একটু সময় লাগবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক একটা রোডম্যাপ করছে। ক্যাপিটাল মার্কেট মোটামুটি চেষ্টা করছে, সেটা হয়তো আরও একটু উন্নত হবে। এনবিআর বিষয়ে আমরা তাড়াড়াড়ি, অধ্যাদেশটা কিছুটা সংশোধন করব, সেটা করে ফেলব। আমাদের একটা টার্গেট, ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু একটা করে ফেলব। এর আগে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে যোগ দেন অর্থ উপদেষ্টা। সেখান থেকে বেরিয়ে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।

গত মে মাসে এনবিআরকে দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেই অধ্যাদেশে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক) ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা ও ক্ষমতা ‘খর্ব করা হয়েছে’ বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দুই ক্যাডারের পক্ষ থেকে সরকারের এই বিভাগটি ‘প্রশাসন ক্যাডারমুক্ত’ করার দাবিও জানানো হয়। দাবি আদায়ের এ আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকারের মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেয় কিছু এনবিআর কর্মকর্তাকে। আন্দোলন থামার আগে-পরে অনেক কর্মকর্তাকে পাঠানো হয় অবসরে। এখন সরকার অধ্যাদেশ সংশোধনের মাধ্যমে এনবিআরকে দুটি বিভাগে রূপান্তরের বিষয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

গত এপ্রিলে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বাংলাদেশের নানা উদ্যোগ ও দর কষাকষির কারণে সেটি কমিয়ে ২০ শতাংশ করে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক কিনা, তা অর্থ উপদেষ্টার কাছে জানতে চান এক সাংবাদিক।

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরেকটু কমলে ভালো হতো। তবে ওরা যেটা করেছে, মোটামুটি, স্বস্তির জায়গা বলব না। আমরা তো চাই এটা (সম্পূরক শুল্ক) না হলে ভালো হতো। চুক্তি এখনো সই হয়নি। একটা ফরমাল চুক্ত সই হবে। এখানে আমরা দেখবো, কোন কোন জায়গায় আমাদের ডিউটি (শুল্ক) কমাতে হবে; কী কী আমদানি করতে হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, খাদের কিনারা থেকে অর্থনীতি অনেকটা উপরে উঠে এসেছে। এটা দেখার জন্য দৃষ্টি এবং অন্তদৃষ্টি লাগে একটু। একেবারে ওপরে ওপরে ভাসা ভাসা দেখলাম, ভাসা ভাসা বলে দিলাম, তা না। অনেক কিছুই হয়েছে।

চ্যালেঞ্জ যেটা ছিলো, একেবারে টালমাটাল অবস্থায় ছিলো। এখন আমরা একটা স্বস্তির জায়গায় আসতে পারছি। অবশ্যই সামনে চ্যালেঞ্জ আছে। চ্যালেঞ্জ অনেক- আমাদের মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি, এখন ট্যারিফের ব্যাপার আছে। আর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ব্যবসায়ী মানুষের আস্থায় আনা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে আরেকটু গতি সঞ্চার করা, যেটা মন্থর হয়ে গেছে। নির্বাচনের বাজেট নিয়ে সাংবাদিকের করা প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের জন্য যে অর্থ লাগবে আমরা দেবো। সেটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।

** এনবিআর সংস্কার সমন্বয় করতে ছয় সদস্যের কমিটি
** রাজস্ব সংস্কার কী চাই, কেন চাই
** এনবিআর সংস্কার: আলোচনায় রাজি অর্থ উপদেষ্টা
** কোন আন্তর্জাতিক মডেলে এনবিআর সংস্কার?
** এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গঠন, ৩টায় অবস্থান
** করনীতি সংস্কারের প্রস্তাব ব্যবসায়ী নেতাদের
** এনবিআর সংস্কারে পাঁচ সদস্যের ‘পরামর্শক’ কমিটি
** আন্দোলনে এনবিআরের ক্ষতি নিরূপণে আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি
** ‘এনবিআর আন্দোলনকে সরকারবিরোধী রূপ দেয়ার ষড়যন্ত্র ছিল’
** এনবিআরের পুরো বোর্ড বাদ দিতে চেয়েছিল সরকার
** এনবিআর আন্দোলনে আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের ইন্ধনের সন্দেহ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!