এনবিআর বিলুপ্তিতে রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়বে না

এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্তে কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় এমন আলাদা বিভাগ রয়েছে। এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। মঙ্গলবার (১৩ মে) সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ে প্রভাব পড়বে না। এখন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় গত বারের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি হয়েছে। খুব হতাশাব্যাঞ্জক নয়, আমরা আরও প্রত্যাশা করছি। অন্তত গত বারের তুলনায় কম হবে না।’ আগামী বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাজেটে বড় ঘাটতি থাকবে না। প্রকল্প, এডিপি বাস্তবায়ন-এসব করা হবে বাস্তবতার ভিত্তিতে। ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা হবে না। কিছুটা তো ঘাটতি থাকবে। সেটা পূরণ করতে আমরা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি, সে ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি সফল’।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে পৃথক পৃথক বিভাগ থাকে। তাঁর মতে, নীতি প্রণয়নকারীদের অবশ্যই পেশাদার হতে হবে—তাঁদের জিডিপি, অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। তিনি বলেন, যারা নীতি প্রণয়ন করবেন, তারাই আবার রাজস্ব সংগ্রহ করবেন—এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সব দেশেই রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়ন বিভাগ পৃথক। যাঁরা নীতি প্রণয়ন করবেন, তাঁদের পেশাদার হতে হবে; অর্থাৎ দেশের জিডিপি, অর্থনীতি, পরিসংখ্যান-এসব বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে। যাঁরা নীতি প্রণয়ন করবেন, তাঁরা আবার রাজস্ব সংগ্রহও করবেন, তা হতে পারে না।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করেছে সরকার। সোমবার (১২ মে) রাতে এ-সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। নতুনভাবে গঠিত বিভাগ দুটি হলো—রাজস্ব নীতি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা।

বিসিএস আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার বহুল আলোচিত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ জারি করে। এতে এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার পক্ষ থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।