নির্ধারিত সময়ে এজিএম করতে না পারায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে শেয়ারবাজারে দুর্বল কোম্পানি হিসেবে ‘জেড’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ব্যাংকটি এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এত দিন এটি ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিতে ছিল।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়। ডিএসইর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, শ্রেণি অবনতি হওয়ায় আজ থেকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ঋণসুবিধা পাবেন না বিনিয়োগকারীরা।
ডিএসই জানায়, গত বছরের মে মাসে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে জেড শ্রেণিভুক্ত করার নতুন নির্দেশনা জারি করে। সেই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা করতে ব্যর্থ হলে ওই কোম্পানিকে জেড শ্রেণিভুক্ত করা হবে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক গত অর্থবছরের লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য ৮ আগস্ট বার্ষিক সাধারণ সভার তারিখ নির্ধারণ করেছিল। তবে কোটাবিরোধী আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের কারণে সভাটি স্থগিত হয়। ছয় মাস পার হলেও ব্যাংকটি সভা করতে পারেনি। এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলমের নিয়ন্ত্রণ কমাতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে এবং স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়।
এদিকে পর্ষদ বদল করা হলেও এখনো ব্যাংকটির মালিকানার বড় অংশই রয়েছে এস আলম ঘনিষ্ঠদের হাতে। শুরুতে ব্যাংকটির নাম ছিল এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। একসময় এটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন আর্থিক খাতে কেলেঙ্কারির জন্য আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার হালদার, যিনি পি কে হালদার নামেই বেশি পরিচিত। পরে পি কে হালদার কেলেঙ্কারির পর ব্যাংকটির নাম বদল করে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক করা হয়।
২০২২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে, বাকিটা এস আলম ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দখলে। ব্যাংকটি ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ব্যাংকটি জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ার খবরে আজ সকালে লেনদেন শুরুর প্রথম ১ ঘণ্টায় ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ১০ পয়সা বা প্রায় আড়াই শতাংশ কমে নেমে এসেছে ৪ টাকা ১০ পয়সায়। গত দুই বছরের মধ্যে ব্যাংকটির শেয়ারের সর্বনিম্ন বাজারমূল্য ছিল ৪ টাকা।