এক প্ল্যাটফর্মেই আমদানি-রফতানির অনুমতি

জাতীয় সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডাব্লিউ) অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালুর মাধ্যমে আমদানি ও রফতানিকারকদের জন্য অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। আগে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিতে হয়রানির শিকার হতে হতো, এখন এক ওয়েব ট্যাবেই সব সংস্থার সেবা পাওয়া যাচ্ছে। গত রবিবার সকাল থেকে ঢাকা কাস্টমস হাউজে শুরু হয়েছে এ সেবা কার্যক্রম।ঢাকা কাস্টমস হাউজে সকাল ১১টায় ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের পরিচালক জুয়েল আহমেদ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

জুয়েল আহমেদ বলেন, এ সিস্টেমের মাধ্যমে আমদানিকারক ও রফতানিকারকরা একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিয়ে লাইসেন্স ও পারমিট পেতে পারবেন। জমা দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইস্যু করা প্রশংসাপত্রের মাধ্যমে সম্ভব হবে পণ্য দ্রুত খালাস করা।

ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মো. জাকির হোসেন বলেন, সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা ব্যবসার উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তর সহজ করবে। ব্যবসায়ীরা এখন অনলাইনে আমদানি-রফতানির সব ধরনের লাইসেন্স ও পারমিট পেতে পারবেন, ফলে অফিসে দৌড়ঝাঁপের প্রয়োজন হবে না।

তিনি বলেন, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আরও ১৫টি সংস্থাকে বিএসডব্লিউয়ের আওতায় আনা হবে, ফলে পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণভাবে চালু হবে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে আমদানিকারক ও রফতানিকারকরা দ্রুত পণ্য খালাস করতে পারবেন এবং এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থার জন্য একটি ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য উইন্ডো সরবরাহ করবে।

তিনি আরও বলেন, একবার সিস্টেমটি পুরোপুরি চালু হলে আমদানি-রফতানির প্রক্রিয়া সহজতর হবে, বন্দর থেকে পণ্য ছাড়পত্র দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং ব্যবসা করার খরচ কমবে।

বিএসডি মূলত একটি অনলাইন প্লাটফর্ম, যা ব্যবহার করে একজন আমদানিকারক-রফতানিকারক পণ্য খালাসের জন্য প্রযোজ্য সব ধরনের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের জন্য (সিএলপি) অনলাইনে আবেদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংগ্রহ করতে পারবেন। সিএলপি গ্রহণের পূর্বে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) ব্যবহার করে বিএসডাব্লিউ সিস্টেমে (Website: bswnbr.gov.bd) নিবন্ধন করতে হবে। এ সিস্টেম ব্যবহারের ফলে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো–

একটি কমন প্ল্যাটফর্মে আমদানি-রফতানি পণ্যের জন্য প্রযোজ্য সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটের সকল কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন হবে, যা সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা একযোগভাবে পরিচালনা করবে। এর ফলে সরকারি কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি পাবে, সময় ও ব্যয় কমবে, এবং দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯টি সংস্থার মধ্যে ৭টি সংস্থার মাধ্যমে বিএসডাব্লিউ সিস্টেমের মাধ্যমে সিএলপির আবেদন ও ইস্যু কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এই ৭টি সংস্থা হলো: ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, বিস্ফোরক পরিদফতর, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, এবং পরিবেশ অধিদফতর।

কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানান, আমদানি ও রফতানি পণ্যচালান শুল্কায়নের ক্ষেত্রে এই ৭টি সংস্থার ইস্যু করা সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট মাধ্যমে দাখিল বাধ্যতামূলক। এখন থেকে আর কোনও ধরনের ম্যানুয়াল সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট গ্রহণ করা হবে না।

ঢাকা কাস্টমস হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম ভুঁইয়া বলেন, এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি প্রতিষ্ঠানের হয়রানি কমবে। আগে বিভিন্ন দফতরে গিয়ে পারমিট ও ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করতে হতো, এখন অনলাইনে আবেদন করলেই তা পাওয়া যাবে। এতে সময় ও হয়রানি কমবে এবং পণ্য দ্রুত খালাস হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!