ঈদের খরচ দেখাতে হবে ‘আয়কর’ নথিতে

ঈদে অনেক করদাতা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলেও তা আয়কর নথিতে উল্লেখ করেন না। এনবিআর চায়, এসব ব্যয়ের সঠিক হিসাব আয়কর বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে আয়কর ফাঁকি রোধ করা যায়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ ব্যবস্থা কার্যকর হলে কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আসবে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলছে, করদাতাদের উচিত, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় সঠিকভাবে ঈদসহ যাবতীয় ব্যয়ের তথ্য দেওয়া। কারণ, কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়লে করদাতাকে এর ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে। এর থেকে বাঁচতে ঈদ উৎসবে কেনাকাটা, উপহার কিংবা ভ্রমণের খরচ কত; তা আয়কর নথিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।যাদের বার্ষিক করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণীতে ঈদের খরচও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আইটি-১০ বি ফরমে জীবনযাত্রার তথ্য দিতে হয়। এর ৭ নম্বর সারণিতে উৎসবজনিত ব্যয় দেখাতে হবে। বিশেষ করে, অভিজাত বিপণিবিতানে কেনাকাটা, ঈদ উপহার বা ভ্রমণের ব্যয় কর কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।

কেন জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণী দিতে হয়?

আয়কর নথিতে জীবনযাত্রার খরচ দেখানো বাধ্যতামূলক করার মূল উদ্দেশ্য হলো করদাতাদের প্রকৃত আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা। অনেক সময় দেখা যায়, কারও আয় কম থাকলেও তার জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি। এই ব্যবধান যাচাই করতে এনবিআর জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণী চায়।বিশেষ করে, যারা ব্যয়বহুল পোশাক কেনেন, বিদেশ ভ্রমণ করেন কিংবা ঈদে লাখ টাকার কেনাকাটা করেন; তাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল আছে কি না, তা কর কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখেন।

জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণীতে যে সব তথ্য দিতে হয়

১. সংসার খরচ: পরিবারের মাসিক খরচ ও ভরণপোষণের তথ্য। ২. আবাসন ব্যয়: নিজস্ব বা ভাড়া বাসার তথ্য, ভাড়া ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়। ৩. যানবাহন খরচ: গাড়ির চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। ৪. পরিষেবা বিল: বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইন্টারনেট, টেলিফোন বিল। ৫. শিক্ষা ব্যয়: সন্তানদের পড়াশোনার খরচ। ৬. ভ্রমণ ব্যয়: দেশে বা বিদেশে ঈদ ভ্রমণের খরচ। ৭. উৎসবজনিত ব্যয়: ঈদের কেনাকাটা ও উপহার বাবদ ব্যয়।

কারা বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদ বিবরণী দাখিল করবেন?

যাদের বার্ষিক করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি, তাদের জীবনযাত্রার খরচ দেখাতে হয়। তবে সম্পদ বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে।

১. যদি কারও মোট সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি হয়। ২. যদি কেউ ব্যক্তিগত গাড়ির মালিক হন। ৩. যদি কেউ অ্যাপার্টমেন্ট বা বাড়ির মালিক হন। ৪. যদি কেউ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হন। ৫. যদি কেউ সরকারি কর্মকর্তা হন। এসব শর্ত পূরণ করলে সম্পদের বিবরণী দাখিল করা বাধ্যতামূলক।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!