২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ই-বাইক উৎপাদনে বড় ধরনের করছাড়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয়ী এই বাহনকে সবার নাগালে আনতে এবং উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়াতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। বাজেটে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে ই-বাইক উৎপাদনে ৫ শতাংশের বেশি সব ধরনের কর মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি, ই-বাইক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আমদানি বা দেশীয়ভাবে কেনার ক্ষেত্রেও ভ্যাট, আগাম কর ও সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণভাবে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এই প্রস্তাব ২ জুন বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশীয় ই-বাইক শিল্পকে উৎসাহিত করতেই এসব ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
তবে এসব সুবিধা পাওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হবে। শর্তগুলো হলো—
১. উৎপাদনকারী বা বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বা বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপথ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে।
২. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে ই-বাইক (টু-হুইলার) উৎপাদনের জন্য মেকারস কোড ও টাইপ অনুমোদন সংগ্রহ করতে হবে।
৩. কারখানায় মেটাল হাউজিং বা চেসিস তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারি— যেমন সিএনসি টিউব বেন্ডার, টিউব নচার, ওয়েল্ডিং মেশিন, হাইড্রোলিক প্রেস, প্লাজমা কাটার বা সিএনসি লেজার কাটার, সারফেস ফিনিশিং মেশিন— বিদ্যমান থাকতে হবে। একইসঙ্গে, কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষমতাও থাকতে হবে।
৪. ই-বাইকের প্লাস্টিকজাতীয় অংশ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কারখানায় স্থাপন করতে হবে।
৫. রং করার জন্য আলাদা পেইন্ট শপ থাকতে হবে এবং রঙকরণ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম কারখানাতেই করতে হবে।
৬. ইলেকট্রিক মোটরের যন্ত্রাংশ নিজস্বভাবে উৎপাদন করতে হবে।
৭. ই-বাইক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের তৈরি ব্যাটারি ব্যবহার করতে হবে বা স্থানীয় কোনো ব্যাটারি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে কিনতে হবে, যার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি থাকতে হবে।
৮. আইএসও সনদসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশ ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
৯. কারখানায় অন্তত ২৫০ জন কর্মী থাকতে হবে।
১০. গ্রাহকদের বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য বিক্রয় কেন্দ্র, খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ ও সেবাকেন্দ্র থাকতে হবে।