ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ পদত্যাগ করেছেন। গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) তিনি পরিচালনা পর্ষদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর আগে, ৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহম্মদ তাঁকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২২ আগস্ট ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাঁচ সদস্যের ওই পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে, যিনি বিগত সরকারের আমলে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের সুপারিশে তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহাম্মদ তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠান এবং পদত্যাগের পরামর্শ দেন। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক জোবায়দুর রহমানকে চেয়ারম্যান করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
সূত্র জানায়, পদ ছাড়ার বদলে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে লবিং করে পদে থাকার চেষ্টা শুরু করেন। এর মধ্যে ১৫ জুলাই তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পরদিন, ১৬ জুলাই সংস্থাটি ইসলামী ব্যাংকে বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে গত আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাসুদ ব্যাংক থেকে কী ধরনের সুবিধা নিয়েছেন, সে সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া, তাঁর সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরের জন্য ব্যাংকের কোনো খরচ নেওয়া হয়েছে কি না এবং তা কোন খাতে দেখানো হয়েছে, সেই সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হয়।
জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ সম্প্রতি কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন বা পরিচালনা পর্ষদ কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকে অবহিত না করেই এক মাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। তিনি বোর্ডে এ বিষয়ে কোনো মেমো উপস্থাপন না করে শুধু মৌখিকভাবে জানান, আন্তর্জাতিক একটি ব্যাংকের সঙ্গে ক্রেডিট লাইন ইস্যুতে বৈঠক করবেন। তবে বিশেষ আমন্ত্রণ ছাড়া কোনো ব্যাংকের চেয়ারম্যানের এমন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠকে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। সাধারণত ব্যাংকের পরিচালনাগত কার্যক্রমে বৈঠক করে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, পর্ষদ কেবল নীতিনির্ধারণী বিষয়ে ভূমিকা পালন করে।