২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ২ শতাংশ সারচার্জ অবিলম্বে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। এই সুপারিশ বৈষম্যহীন টেকসই অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে তৈরি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে করা হয়েছে।
৩০ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বিটিআরসিকে ইন্টারনেট রাজস্বের জন্য ৫.৫% রাজস্ব ভাগাভাগি এবং ১% সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ) মওকুফ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারনেটচালিত প্রযুক্তি, বিশেষত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিবেচনায় সরকারকে ইন্টারনেটকে ‘সামাজিক কল্যাণ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে, সব নাগরিকের জন্য ন্যায্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্য। এতে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওপর ৫০ শতাংশের বেশি চার্জ আরোপ করে এখন যে উচ্চ কর ও রাজস্ব নীতি নেওয়া হয়েছে, তা ‘ন্যায়সংগত উন্নয়নের প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতির সরাসরি বিরোধিতা করে’।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইটিসি), ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ও ন্যাশনওয়াইড ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কসহ (এনটিটিএন) ২৯টি লাইসেন্সিং ক্যাটাগরি থাকায় ডেটা ট্রান্সমিশন ভ্যালু চেইন একাধিক স্তরে বিভক্ত—যা এক জটিল টেলিকম ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে। এর ফলে তৈরি হয়েছে অদক্ষতা।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেকোনো আইএসপি বা টেলিকম কোম্পানি ১ টাকার (০.৫ টাকা) কম দামে ১ জিবি ডেটা কিনে। শহরাঞ্চলে শেষ পর্যায়ের ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে দিতে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা প্রদানকারীদের এর বাইরে খুব কম খরচ পড়ে।তাই ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীরা পরিষেবা প্রদানকারীদের খুব কম মূল্য দেয়, প্রতি জিবিতে ২ টাকারও কম।তবে গ্রামাঞ্চলে প্রধান পরিষেবা প্রদানকারী যেকোনো টেলিকম অপারেটরের জন্য ব্যান্ডউইথের ট্রান্সমিশন খরচ ব্যান্ডউইথ খরচের চেয়ে ছয়গুণ বেশি।
প্রতিবেদন অনুসারে, টেলিকম অপারেটরদের প্রতি ১ জিবি ব্যান্ডউইথের জন্য এনটিটিএনকে ১.২ টাকা এবং টাওয়ার কোম্পানিগুলোকে ২.৬ টাকা দিতে হয়।
এছাড়া, ডিডব্লিউডিএম আমদানি ও ব্যবহারের অনুমতি কেবল এনটিটিএন পায়, টেলিকম অপারেটররা নয়, যা তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর কম ব্যবহার ও উচ্চমূল্যের প্রধান কারণ অবকাঠামো ও স্পেকট্রাম ভাগাভাগির সীমাবদ্ধতা।
টেলিকম কোম্পানিগুলো অব্যবহৃত অবকাঠামো ও স্পেকট্রাম ভাগাভাগির অনুমতি পায় না। যদিও টাওয়ার ভাগাভাগির অনুমতি রয়েছে, অপারেটরদের অসহযোগিতার কারণে পূর্বের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।