জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব ও যুগ্ম কমিশনার (কাস্টমস) তানজিনা রইসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব মো. হুমায়ুন কবীর সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তানজিনা রইস বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ২৮তম ক্যাডারের কর্মকর্তা। সর্বশেষ তিনি এনবিআর প্রথম সচিব (মূসক পরিবীক্ষণ ও করদাতা সেবা) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছুটি না নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে এনবিআর সূত্র বিজনেস বার্তাকে জানিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এনবিআরের প্রথম সচিব তানজিনা রইসের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩ (খ) ও ৩ (গ) বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিধিমালার ১২ নম্বর বিধি অনুসারে, কর্তৃপক্ষ তাঁর সাময়িক বরখাস্তকে প্রয়োজনীয় ও যথোপযুক্ত মনে করেছে। এ কারণে বিধি ১২ (১) অনুযায়ী তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাওয়ার যোগ্য হবেন।
এনবিআর সূত্রমতে, বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের কর্মকর্তার স্বামী অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হয়েছেন। এই কর্মকর্তা ২০১৮ সালে যুগ্ম কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (পশ্চিম)-এ কর্মরত ছিলেন। ওই বছরের শেষ দিকে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককোয়ারি ইউনিভার্সিটিতে ‘মাস্টার্স অব কমার্স উইথ এ স্পেশালাইজড ইন ফাইন্যান্স কোর্ড’ কোর্স করতে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যান। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এই মাস্টার্স করতে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত শিক্ষা ছুটি মঞ্জুরি করে। মাস্টার্স শেষে তিনি দেশে চলে আসেন।
সূত্র আরও জানায়, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসার পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি সন্তানের চিকিৎসা করাতে থাইল্যান্ড গিয়েছেন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে সন্তানের চিকিৎসা করাতে তাকে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। সেখান থেকে দেশে না ফিরে ছুটি না নিয়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন। আর ফিরে আসেননি। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, ছুটি না নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়া পড়তে গিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য পিআর (পারমানেন্ট রেসিডেন্ট) নিয়ে এসেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। দেশে আসার পর জিপি ফান্ডের টাকাসহ অন্যান্য টাকা তুলে নিয়েছেন।