অলীক পরিস্থিতিতেও ৬ দিনে ৭৫% বেড়েছে শেয়ারদর
এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তনের গুজব ছড়িয়ে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়াচ্ছে একটি পুরোনো কারসাজি চক্র। গত পাঁচ দিন ধরে শেয়ারটি সার্কিট ব্রেকার দ্বারা নির্ধারিত সর্বোচ্চ দামে কেনাবেচা হচ্ছে। মাত্র ছয় কর্মদিবসে শেয়ারটির দাম ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে শেয়ারদাম বাড়ার সাথে সাথে ক্রয় আদেশের তুলনায় শেয়ার কেনাবেচা কমে যাচ্ছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের শেয়ার সর্বনিম্ন ৯ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন হয়। গতকাল রোববার একই শেয়ার ১৬ টাকা ৯০ পয়সায় কেনাবেচা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ১১ লাখ শেয়ার লেনদেন হলেও গতকাল তা ৯০ হাজারেরও কম ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তা বলেন, ‘মালিকানা বদল হবে’– এমন গুজব ছড়িয়ে এটিসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হচ্ছে। এটা কারসাজি ভিন্ন অন্য কিছু নয়।
শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, এই দরবৃদ্ধির পেছনে আছেন আলোচিত শেয়ার কারসাজির হোতা আবুল খায়ের হিরো। আগের মতো নিজের অ্যাকাউন্টে না হয়ে, প্রভাবশালী পরিবারের কয়েকজনসহ অনেক অনুসারীর মাধ্যমে তিনি শেয়ার কারসাজির নতুন কৌশল ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে জানতে আবুল খায়ের হিরোকে ফোন করা হলেও, তিনি সাড়া দেননি।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট সব কোম্পানি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে এই কোম্পানির শেয়ার দরবৃদ্ধি বেশ আলোচনার সৃষ্টি করেছে শেয়ারবাজারে। এ বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তথ্য চাইলে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা এই অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কোনো কারণ জানেন না।
উৎপাদন বন্ধ এবং অনাদায়ী ঋণ আদায়ে কোম্পানির সম্পত্তি নিলামে তোলার খবরের বিষয়ে ডিএসই জানতে চাইলে গত ৩০ ডিসেম্বর কোম্পানিটি জানায়, ব্যাংকগুলোর এলসি খোলার নিষেধাজ্ঞার কারণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক ও কাঁচামালের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, ফলে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে তারা। অনাদায়ী ঋণ আদায়ে সম্পত্তি নিলামে তোলার বিষয়ে কোম্পানিটি ৮ জানুয়ারি জানায়, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বন্ধক রাখা সম্পদ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে, যা দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকটের প্রত্যক্ষ প্রভাব বলে জানানো হয়।
গতকাল এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলসহ আরও চার কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দামে কেনাবেচা হয়েছে। এসব কোম্পানিগুলো হলো: বারাকা পাওয়ার, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, পদ্মা লাইফ এবং সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।