অর্থ বিভাগ পাচ্ছে প্রাইমারি ডিলার নিয়োগের দায়িত্ব

সরকারি সিকিউরিটিজ কেনাবেচার জন্য প্রাইমারি ডিলার নিয়োগের দায়িত্ব এতদিন ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে। তবে এখন থেকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রাইমারি ডিলার নিয়োগ করবে অর্থ বিভাগ। এ বিষয়ে গতকাল অর্থ বিভাগ থেকে একটি নতুন নীতিমালাও জারি করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাসান খালেদ ফয়সালের স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে জানানো হয়েছে, সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাথমিক ও পুনঃবিক্রয়যোগ্য বাজারকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে ‘গাইডলাইন ফর দ্য এনলিস্টমেন্ট অ্যান্ড অপারেশনস অব প্রাইমারি ডিলারস ইন গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ ২০২৫’ জারি করা হয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে জারি করা এ নির্দেশিকা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে। এতে ২০০৩ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারি করা পূর্ববর্তী নির্দেশিকাটি বাতিল করা হয়েছে।

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান প্রাইমারি ডিলার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা, সক্ষমতা, দক্ষ জনবল, পূর্ব অভিজ্ঞতা ও আর্থিক ভিত্তি যাচাই করে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রাইমারি ডিলার নিয়োগ করবে অর্থ বিভাগ। একক প্রাইমারি ডিলারের বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, তারা শুধু সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাথমিক ও পুনঃবিক্রয়যোগ্য বাজারে বাজার সৃষ্টিকারী হিসেবে লেনদেন করবে এবং কোনোভাবে আমানত গ্রহণ বা অন্যান্য ব্যাংকিং কার্যক্রমে অংশ নেবে না; তারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করবে।

প্রাইমারি ডিলারদের জন্য নির্ধারিত কিছু বাধ্যবাধকতার কথা নতুন নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও পুনঃবিক্রয়যোগ্য বাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেনে ডিলারদের সক্রিয় থাকতে হবে। বিডিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের দুই ধাপে অংশ নিতে হবে। প্রথম ধাপে, প্রতিটি ডিলারকে তাদের মোট চাহিদা ও সময়সীমাবদ্ধ দায়ের ভিত্তিতে হিসাব করে ৬০ শতাংশ বিডে অংশগ্রহণ করতে হবে। বাকি ৪০ শতাংশ বিড ডিলারদের মধ্যে সমানভাবে অথবা নিলাম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বণ্টন করা হবে। পুনঃবিক্রয়যোগ্য বাজারে প্রতিটি প্রাইমারি ডিলারকে বছরে কমপক্ষে তাদের সাপ্তাহিক ঋণমান অথবা ৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি, সেই পরিমাণ লেনদেন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে অর্থ বিভাগ প্রতি বছর প্রাইমারি ডিলারদের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করবে। এ মূল্যায়নের ফলাফলের ভিত্তিতে এবং নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন বিবেচনায় তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। বার্ষিক পারফরম্যান্স অনুযায়ী র‌্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেরা তিনটি প্রাইমারি ডিলার নির্বাচিত হবে, যারা তুলনামূলকভাবে বেশি কমিশন লাভ করবে।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে সরকার মুদ্রাবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় সরকারি সিকিউরিটিজ ব্যবস্থাপনায় অর্থ বিভাগের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা এবং আইনি কাঠামোতে পরিবর্তন আনার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কিছু সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশের আলোকে পুরনো নীতিমালা সংস্কার করে নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!