চেয়ারম্যানের অপসারণসহ ‘অসহযোগ’ কর্মসূচি

** বুধবারের অবস্থান কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবার এনবিআর সদস্যরা সরাসরি একাত্মতা ঘোষণা করেছেন
** অধ্যাদেশ বাতিলসহ তিন দফা দাবির সঙ্গে নতুন করে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি যোগ হয়েছে
** বুধবার থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানের সাথে লাগাতার অসহযোগিতা বা অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে
** দাবি আদায়ে বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে ঐক্য পরিষদ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করবে
** ২২ মে বৃহস্পতিবার এনবিআর ও এনবিআরের অধীনস্থ সকল ভ্যাট, ট্যাক্স ও কাস্টমস অফিসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত থাকবে।
** ২৪ মে শনিবার ও ২৫ মে রোববার সকল কাস্টম হাউস ও এলসি স্টেশন ব্যতীত কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের সকল অফিসে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করা হবে। এই দুইদিন কাস্টম হাউস ও এলসি স্টেশনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে
** ২৬ মে সোমবার আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত সকল আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টম হাউসে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালিত হবে

এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে অনবরত আন্দোলন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ের কোনো আশ্বাস-ই পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো সচিবালয়ে ডেকে কর্মকর্তাদের কোনো কথাই বলতে দেওয়া হয়নি। উল্টো অপমান করা হয়েছে। দাবি আদায়ে এবার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। সঙ্গে নতুন করে ‘এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে অসহযোগ ও এনবিআর চেয়ারম্যানের’ অপসারণের দাবি যোগ হয়েছে। বুধবার (২১ মে) আগারগাঁও এনবিআরের নিচে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

কর্মসূচি ঘোষণা করে উপ কমিশনার মো. শাহাদাত জামিল বলেন, এনবিআরের কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাক্স বিভাগের সকল স্তরের কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের একটি এডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এডহক কমিটির গ্রেড-১০ ও তদূর্ধ্ব অংশের সদস্যদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ধারাবাহিকভাবে গ্রেড-১১ থেকে গ্রেড-২০ অংশের সদস্যদের প্রাথমিক তালিকাও প্রকাশ করা হবে।

ঐক্য পরিষদ থেকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, একটি বিষয় শুরু থেকেই আমাদের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, আমাদের এই নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সরকারের নীতিনির্ধারকদেরকে সঠিক তথ্য প্রদান না করে বরং প্রকৃত তথ্য আড়াল করেছেন, যা পরিস্থিতিকে আজকের অবস্থানে উপনীত করেছে। সেজন্য কর্মসূচির অংশ হিসেবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কর্মকর্তাদের লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

Tiro Bangla 2025 05 21T145142.519

সংবাদ সম্মেলনে আগের তিন দফার সঙ্গে নতুন করে চেয়ারম্যানের অপসারণসহ চার দফা দাবির কর্মসূচি ঘোষণা করে মো. শাহাদাত জামিল। যার মধ্যে রয়েছে-জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা; অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ; রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা; এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থাসমূহ, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করা।

সংবাদ সম্মেলনে এই চার দফা দাবি আদায়ে আরো কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-আজ বুধবার থেকে সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানের সাথে লাগাতার অসহযোগিতা বা অসহযোগ কর্মসূচি পালন করা; আগামীকাল ২২ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিসমূহের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা; একইদিন বৃহস্পতিবার এনবিআর এবং ঢাকা ও ঢাকার বাইরে স্ব-স্ব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে, রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতামুক্ত থাকবে। ২৪ মে শনিবার এবং ২৫ মে রোববার সকল কাস্টম হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহ ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে। এই দুইদিন কাস্টমস হাউস এবং এলসি স্টেশনসমূহে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। তবে, রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। আগামী ২৬ মে সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করা হবে।

Tiro Bangla 2025 05 21T150712.713

ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কর কমিশনার হাসিনা আক্তার বলেন, শতবর্ষ প্রাচীন এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের উদ্দেশ্যে ১২ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে অত্যন্ত গোপনে এবং প্রত্যাশিত সংস্থাসমূহ, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে অজ্ঞাত রেখে। জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলসহ তিনটি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৪ মে থেকে এখন পর্যন্ত আমরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা তিন দফা দাবি পেশ করি। সে লক্ষ্যে ১৪-১৫, ১৭-১৯ মে এনবিআরের আওতাধীন আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সকল দপ্তরে আংশিক কলম বিরতি পালন করা হয়। পরবর্তীতে অর্থ উপদেষ্টার সাথে সভা অনুষ্ঠানের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে কোন কর্মসূচি রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, ২০ মে মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে অর্থ উপদেষ্টার সাথে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্য, এনবিআরের তিনজন সাবেক সদস্য, অর্থ বিভাগের সচিব এবং এনবিআরের চেয়ারম্যান।

Tiro Bangla 2025 05 21T145259.046

সভার শুরুতেই অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমি সভা দীর্ঘ করবো না। কর থেকে একজন এবং কাস্টমস থেকে একজন, সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি থেকে যেকোন তিনজন কথা বলতে পারবেন। আমি ৬-৭ মিনিটের বেশি দেবো না। কেবিনেট সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিব এর সাথে আরেকটি মিটিং আছে, আমি তাদের বসিয়ে রাখতে পারবো না এবং সময় গণনার জন্য কে থাকবেন সেটিও জিজ্ঞাসা করেন। ঐক্য পরিষদের মোট ১৩ জন প্রতিনিধির মধ্যে মাত্র দুইজন প্রতিনিধি বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয় যে, এনবিআরের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সংস্কারের পক্ষে এবং তারা চান এনবিআরকে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পূর্ণাঙ্গ, টেকসই ও কার্যকরভাবে সংস্কার করা হোক। পরিষদের পক্ষ থেকে দৃঢ়ভাবে বলা হয়, এনবিআরকে অক্ষুণ্ন রেখে তাকে আরও শক্তিশালী, আধুনিক ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাই হবে দেশের জন্য কল্যাণকর।

তিনি বলেন, পরিষদ এটিও উল্লেখ করে যে, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিংক ট্যাংক যেমন সিপিডি, টিআইবি প্রমুখ ইতোমধ্যে প্রকাশ্য বিবৃতিতে সংস্কার প্রক্রিয়ার কাঠামো ও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সভায় রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটির সদস্যরা স্পষ্টভাবে বলেন যে, তাদের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে যেভাবে সংস্কারের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে, তা জারি করা অধ্যাদেশে প্রতিফলিত হয়নি। কমিটির সদস্যরা বলেন, যদি তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। তারা দুটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেই নির্ধারিত হওয়া উচিত—এই বিষয়ে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেন। পরামর্শক কমিটির বক্তব্যের শেষে দুইজন উপদেষ্টা বক্তব্য রাখেন। আমরা আশা করেছিলাম যে, পরামর্শক কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা দুইজন উপদেষ্টার বক্তব্যের মধ্যে পাবো। কিন্তু পরিতাপের সাথে আমরা জানাচ্ছি যে, তারা জারি করা অধ্যাদেশের পক্ষে কথা বলেন এবং অধ্যাদেশটি ভালো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। কোনটি সঠিক, কোনটি আন্তর্জাতিক মানদন্ডে গ্রহণযোগ্য, কোনটি দেশের জন্য সর্বোত্তম হবে সে বিষয়ে তারা কিছু বলেননি।

সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সভায় অর্থ উপদেষ্টা জানান যে, বাস্তবায়ন পর্যায়ে আমাদের কনসার্ন অ‍্যাড্রেস করার চেষ্টা করবেন। মিটিং শেষে অর্থ উপদেষ্টা একটা স্টেটমেন্ট মিডিয়ার কাছে দিয়েছেন। তার মাধ‍্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, দেশের স্বার্থে ব‍্যবসায়ীদের স্বার্থ দশের স্বার্থে যে অধ‍্যাদেশ অনুমোদন হয়েছে তা থাকবে। তবে আমাদের যে জিনিসগুলো আছে তা অ্যাডভাইজারী কমিটির সাথে আলোচনা করে বিধি বা অন‍্য কিছু করে অ‍্যাড্রেস করার চেষ্টা করা হবে। এ বিষয়ে আর কোন আলোচনা নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। আমাদের আন্দোলন চলবে কি চলবে না-সে বিষয়ে কিছু আসে যায় না বলে তিনি মন্তব‍্য করেছেন। জুলাই বিপ্লব ফ‍্যাসিবাদ উত্তর যুগে মিটিং-এ সরকারের নীতিনির্ধারকদের বক্তব্য ও সভা শেষে মিডিয়ায় দেওয়া বক্তব্য আমাদেরকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আমরা সবশেষে কিছু কথা বলার সুযোগ চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদেরকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে সভাটি ‘ফলপ্রসূ’ ছিল বলে অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্য ও মন্তব্য উল্লেখ করা হয়।

Tiro Bangla 2025 05 21T145436.100

অপরদিকে, সংবাদ সম্মেলনের আগে এনবিআর ও এনবিআরের অধীনস্থ ঢাকার সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এতে শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন। সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে মুখে কালো কাপড় বেঁধে এবং হাতে বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্লে-কার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। অর্থ উপদেষ্টা ও এনবিআর চেয়ারম্যানের নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন। একইসঙ্গে উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন। অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি এবং সংবাদ সম্মেলনে এতদিন এনবিআরের সদস্যরা সরাসরি অংশ নেননি। বুধবার কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের প্রায় সব সদস্য এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। অস্তিত্বের প্রশ্নে এনবিআরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এক হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়।

**অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সভা ফলপ্রসূ হয়নি: ঐক্য পরিষদ
**‘এনবিআর নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি দূর হয়েছে’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!