অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে

অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মচারীদের পেনশন-সংক্রান্ত জটিলতা দূর করে নতুন সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত হলে পেনশন ভোগের সময় দ্বিতীয় বিয়ে করলে দ্বিতীয় স্ত্রী বা স্বামীও পেনশন সুবিধা পাবেন, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের পেনশন পুনঃস্থাপনের অপেক্ষাকাল ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করা হবে এবং জটিল রোগে আক্রান্ত পেনশনাররাও সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে চিকিৎসা সহায়তা পাওয়ার সুযোগ পাবেন।

এছাড়া, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীরা পেনশন পুনঃস্থাপন না করে মারা গেলে তাঁদের স্বামী/স্ত্রী বা যোগ্য উত্তরাধিকারীদের পেনশন মঞ্জুরের বিষয় অর্থ বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় পেনশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সভায় পেনশন গ্রহীতাদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন, জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা প্রতি মাসে পেনশন ভোগ করেন। পেনশন ভোগকারী মারা গেলে তাঁর স্ত্রী বা স্বামী আজীবন পেনশন পান এবং কিছু ক্ষেত্রে যোগ্য পোষ্যরাও নির্ধারিত সময়ের জন্য সুবিধা পান। ১৯৮০ সাল থেকে সরকার পেনশনের পুরো টাকা একসঙ্গে তোলার সুযোগ দিয়েছে। এর ফলে অনেকেই তাদের পেনশন পুরোপুরি পরিবার বা সন্তানদের কাজে ব্যবহার করেছেন। তবে এর ফলে কিছু পেনশনার বিপাকে পড়েছেন। এসব সমস্যায় পড়া পেনশনাররা একটি মোর্চা গঠন করে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেনদরবার করেছেন।

শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী সরকারি কর্মচারীদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর তাঁদের মাসিক পেনশন পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অর্থ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী কর্মচারীরা অবসর গ্রহণের ১৫ বছর পরই পেনশন পুনঃস্থাপন করতে পারবেন। একসঙ্গে পেনশনের সব টাকা তুলে নেওয়া কর্মচারীরা আর মাসিক পেনশন পান না; তবে তাঁদের বছরে দুটি উৎসব ভাতা এবং চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়।

শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীরা অবসরে যাওয়ার ১৫ বছর পরই পেনশন পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন। যদি পেনশন পুনঃস্থাপনের আগে কেউ মারা যান, তবে তাঁর স্বামী/স্ত্রী বা যোগ্য উত্তরাধিকারীরা এখনো পেনশন সুবিধা পান না। এ ক্ষেত্রে পেনশন পুনঃস্থাপনের আগে মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য পেনশন মঞ্জুরের বিষয় অর্থ বিভাগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সূত্র জানায়, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীর পেনশন পুনঃস্থাপনের নির্ধারিত অপেক্ষাকাল ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করা যায় কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশের জন্য অর্থ বিভাগ জাতীয় বেতন কমিশনে প্রস্তাব পাঠাবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া পেনশন ভোগরত অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করলে ওই পেনশনারের মৃত্যুর পর তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে পারিবারিক পেনশন মঞ্জুরের বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থ বিভাগ জাতীয় বেতন কমিশনে প্রস্তাব পাঠাবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অবসরপ্রাপ্ত প্রবাসী সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে পেনশন-সংক্রান্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষরসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার বিষয়টি অর্থ বিভাগকে পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের বার্ষিক ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট হিসাব করে উৎসব ভাতা দেওয়া হলেও, পেনশন পুনঃস্থাপনের পর সেই ইনক্রিমেন্টের বর্ধিত অর্থ পেনশনের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য অর্থ বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রচলিত ব্যবস্থার মতো, অবসরপ্রাপ্তরা যদি জটিল রোগে আক্রান্ত হন, তবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

** সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা অনুদান বাড়ল
** প্রশিক্ষণ-সম্মানী ভাতা বেড়েছে সরকারি কর্মচারীদের
** সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১০-১৫% বিশেষ সুবিধা
** সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনের পথ বন্ধ হচ্ছে
** সরকারি কর্মচারীদের বেতনে ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ
** সরকারি কর্মচারীদের সঞ্চয়ে ১৩% পর্যন্ত মুনাফার সুযোগ
** সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমার সময় বাড়ল
** কর্মচারীরা আন্দোলন করলে বাধ্যতামূলক অবসর
** সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘বিশেষ সুবিধা’
** জুলাই থেকে মহার্ঘ ভাতা পাবেন সরকারি কর্মীরা
** ৬০ বছরে পেনশনের ৩০% টাকা তোলার সুযোগ
** ১৫ বছরের চাকরিতে পেনশন সুবিধা
** ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!