অতিরিক্ত শুল্ক ,বেনাপোল দিয়ে মাছ আমদানি বন্ধ

দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে মাছ আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। আমদানিকারকদের অভিযোগ, নির্ধারিত শুল্কের চেয়ে বেশি অর্থ আদায় এবং নতুন শর্ত আরোপের কারণে তারা বাধ্য হয়ে আমদানি বন্ধ করেছেন। এতে প্রতিদিন সরকারের কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় ব্যাহত হচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৩৫ হাজার ৪৯৩ মেট্রিক টন মাছ আমদানি হয়েছিল। তবে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সেই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ১১৮ মেট্রিক টনে। অর্থাৎ আগের অর্থ বছরের তুলনায় এবার আমদানি কমেছে ১৮ হাজার ৩৭৫ মেট্রিক টন।

রোববার (১০ আগস্ট) সকালে বেনাপোল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, কোনো মাছবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার সকাল থেকে মাছ আমদানি বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন এ পথে মাছ আমদানি থেকে সরকার ৮০ লাখ থেকে এক কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করত।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সামুদ্রিক মাছে কেজিপ্রতি শুল্ক নির্ধারণ করেছে ৫০ সেন্ট (প্রায় ৩৮ টাকা)। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, বেনাপোল কাস্টমস হাউজ কেজিপ্রতি ৭৫ সেন্ট শুল্ক নিচ্ছে। এতে প্রতি কেজিতে অতিরিক্ত ২৫ সেন্ট বা প্রায় ২০ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে আমদানিকারকদের, যা প্রতি চালানে কয়েক লাখ টাকার বাড়তি খরচ তৈরি করছে। তবে এনবিআর নির্ধারিত মিঠাপানির মাছে কেজিপ্রতি ১.৫০ সেন্ট (৮৮ টাকা) শুল্ক বহাল রয়েছে। পাশাপাশি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নতুন শর্ত দিয়েছে—প্রতিটি ট্রাকে ৮০ শতাংশ মিঠাপানির মাছ ও ২০ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ থাকতে হবে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই শর্তে ভারত থেকে মাছ আমদানি করা অলাভজনক হয়ে পড়েছে।

ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক নাসির উদ্দীন বলেন, অতিরিক্ত শুল্ক ও অযৌক্তিক শর্তের কারণে তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন। আগের তুলনায় ট্রাকপ্রতি মাছ আমদানির খরচ প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে, ফলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতির ঝুঁকি বেশি। আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে মাছ আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যবসা ধ্বংস হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও মারাত্মকভাবে কমে যাবে।

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মীর্জা রাফেজা সুলতানা বলেন, মাছ আমদানে কোনো বাধা নেই এবং ‘প্রতিটি ট্রাকে ৮০% মিঠাপানি ও ২০% সামুদ্রিক মাছ থাকতে হবে’—এ তথ্য সঠিক নয়। ব্যবসায়ীদের দেয়া ঘোষণার সঙ্গে আমদানিকৃত পণ্যের মিল না থাকার কারণে গত সপ্তাহে কয়েকটি চালানে অনিয়ম পাওয়া গেলে জরিমানা করা হয়েছিল। বৈধ আমদানে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

**ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কমেছে
**তিন মাসে রাজস্ব আদায় কমেছে ২৩৯.৪২ কোটি টাকা
**ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ
**বাংলাদেশি কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত
**বেনাপোলে শত কোটি টাকার হোমিও ওষুধ জব্দ
**বেনাপোলে চাপ কমাতে ভোমরায় আমদানি উন্মুক্ত
**বেনাপোলে কমবে যানজট ও পণ্যজট, বাড়বে রাজস্ব
**বেনাপোল বন্দর-কাস্টমসে সবই অনিয়ম
**বেনাপোল দিয়ে দুইদিনে ফল এসেছে ১২০ ট্রাক
**চাকার স্লাবে শুল্ক, বেনাপোলে রাজস্ব কমছে
**বেনাপোলে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আসছে ভারতীয় পোশাক
**বেনাপোলের ২৫ কোটি টাকার চুরির কাপড় উদ্ধার
**টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর
**এক বছরে বেনাপোলে যাত্রী চলাচল অর্ধেকে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!