সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার

বিজনেস বার্তা প্রতিবেদক: মুহাম্মদ রহমত উল্যাহ। চিফ রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক শেয়ার বিজ পত্রিকায় কর্মরত। দেশের প্রথম সারির বিজনেস রিপোর্টারদের মধ্যে রহমত অন্যতম। বিজনেস রিপোর্টার হিসেবে ক্যারিয়ারের এক যুগ পার করেছেন এই গুণী সাংবাদিক। ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ক্যারিয়ার গড়া এই সংবাদকর্মীর আজ মুখোমুখি হয়েছে বিজনেস বার্তা। সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়ার পেছনের গল্প, প্রতিকূলতা পেরিয়ে বর্তমান অবস্থানে আসা, সংবাদপত্রের বর্তমান অবস্থা, নতুন যারা এই পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান-তাদের জন্য নানান টিপ নিয়ে হাজির হয়েছে বিজনেস বার্তায়।

সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়ার পেছনের গল্প

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিলো চিকিৎসক হওয়ার। সেই ব্রত নিয়েই বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করেছেন। রসায়নে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। তবে সমাজের নানান অনিয়ম দেখে সাংবাদিক হওয়ার সাধ জাগে। তাই তো অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় স্থানীয় পত্রিকায় লেখা শুরু করেন। অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজে নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি চলে সাংবাদিকতা। সমাজের নানান অসঙ্গতি তুলে ধরায় অল্প সময়ে বিভিন্ন মহলে পরিচিতি লাভ করেন এই সাংবাদিক। যার ফলে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। যদিও লেখাপড়ার সাবজেক্ট আর ক্যারিয়ারের সাবজেক্ট দুইটি দুই মেরুর। তবে লেখনির ক্ষুরধারের ফলে লেখাপড়ার সাবজেক্ট ক্যারিয়ারের সাবজেক্টে কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অনার্স শেষে ‘স্টাফ করেসপন্ডেন্ট’ হিসেবে পদোন্নতি পান। ডাক পড়ে মফস্বল ছেড়ে ঢাকায় ক্যারিয়ার গড়ার। সুযোগ আর মিস করেননি। ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় বাংলানিউজে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট হিসেবে যোগ দেন। ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই ইকোনমিক রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন। বাংলানিউজের দীর্ঘ কর্মজীবন শেষ করে ২০১৮ সালে যোগ দেন দেশের প্রথম বিজনেস ডেইলি দৈনিক শেয়ার বিজ পত্রিকায়। কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়করের মতো জটিল বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ক্যারিয়ারের ঝুলিতে যোগ করেছেন একাধিক সম্মাননা। বর্তমানে ওই পত্রিকার চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রতিকূলতা পেরিয়ে বর্তমান অবস্থানে আসা

মফস্বল সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়া সহজ কাজ নয়। আর সাংবাদিকের সাংবাদিকতা শুরুটাও এতটা মসৃণ হয়নি। মফস্বলে এক নামের একজন সাংবাদিক। একটা গণমাধ্যমে কাজ করলে সবাই তাকে চেনে। ফলে সহজে কারো বিরুদ্ধে লেখা যায় না। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতে সাংবাদিকতায় কোন বিষয় কমপ্রোমাইজ করা কঠিন। কমপ্রোমাইজ না করলে পড়তে হয় চরম বিপদে। ক্যারিয়ারের শুরুতে সেই জটিল সময় পাড়ি দিতে হয়েছে এই সাংবাদিককে। বিশেষ করে নিউজ প্রকাশ করে পড়তে হয়েছে তোপের মুখে। প্রশাসন আর সাংবাদিককের তোপের মুখে। তবে সততা, সত্যবাদিতায় আপোস না করায় কিছু মানুষের সহযোগিতা পেয়েছেন। তাই তো বীরদর্পে জেলায় সাংবাদিকতা করে ডাক পেয়েছেন ঢাকায়। ঢাকায় আসার পর নিজ মেধার পাশাপাশি পরিশ্রমের ফলে আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছেন। প্রতিনিয়ত শিখছেন এই সংবাদকর্মী।

সংবাদপত্রের বর্তমান অবস্থা

দেশে গণমাধ্যম এর প্রসার হয়েছে। গণমাধ্যমে নি:সন্দেহে সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করছে। গণমাধ্যমের যত প্রসার হবে সমাজ থেকে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা তত দূর হবে। গত কয়েক বছরে দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি সংবাদকর্মীদের ঝুঁকিও বেড়েছে। বর্তমানে সংবাদপত্র এক সংকটমময় সময় পার করছে। এই থেকে উত্তোরণে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

নতুনদের এই পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে হলে

সাংবাদিকতা যেমন স্বাধীন পেশা। তেমনি এই পেশায় ঝুঁকিও কম নয়। সেজন্য এই পেশায় যারা আসবেন, তাদের স্বাগতম। যদি নিজ মেধা, যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে চান তাহলে সাংবাদিকতায় আসতে পারেন। কারণ মেধাবী ছাড়া এই পেশায় ভালো করার কোন সুযোগ নেই। দেশে যেমন সংবাদপত্রের প্রসার হয়েছে, সে হারে মেধাবীরা এই পেশায় আসেনি। অনেকেই সাংবাদিকতায় পড়াশোনা করে অন্য পেশায় ক্যারিয়ার গড়ছে। তবে তরুণদের এই পেশাকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেঁচে নিতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সাংবাদিকতা হাতে মুঠোয় চলে আসছে। আপনাকে মেধার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে আপনি এই পেশায় ভালো কিছু করতে পারবেন।

 

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!