বকেয়া ২২৫৮৪ কোটি, আদায়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ

পেট্রোবাংলার কাছে এনবিআরের বকেয়া

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) কাছে পাওনা টাকা আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে আয়োজিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এনবিআরের বকেয়া রাজস্ব পরিশোধ করতে পেট্রোবাংলাকে ঋণ দিতে অর্থসচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট-ভ্যাটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা। ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত সংস্থাটির বকেয়ার পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা।

এনবিআর সূত্রমতে, বকেয়া পরিশোধে এনবিআর ও পেট্রোবাংলার মধ্যে বেশ কয়েকবার সভা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক তেল কম্পানির উত্তোলন করা গ্যাস বিতরণের বকেয়া ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা ভ্যাটও দীর্ঘদিন পরিশোধ না হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এই জটিলতা কাটাতে চলতি বছরের জুনে অর্থ বিভাগে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সভায় এনবিআরকে টাকা পরিশোধের শর্তে বিনা সুদে পেট্রোবাংলাকে তিন অর্থবছরে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তিন হাজার ২৭৮ কোটি টাকা ঋণ অর্থ বিভাগ পেট্রোবাংলাকে দেবে। এরই মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বকেয়া রাজস্ব পরিশোধের জন্য পেট্রোবাংলাকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা সুদমুক্ত ঋণ অনুমোদন করে। চলতি অর্থবছরে পূর্বনির্ধারিত পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগকে অনুরোধ করেছে এনবিআর। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ০.৫ শতাংশ বাড়াতে রাজি হয়েছিল সরকার। ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে যথাক্রমে ০.৫ শতাংশ এবং ০.৭ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, চলতি অর্থবছরে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এনবিআরকে। এর মধ্যে ভ্যাট বাবদ আদায়ের লক্ষ্য এক লাখ ৭৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের জেরে রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলা ছাড়াও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এবং এর বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে এনবিআরের বকেয়া আরো ১৭ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ বিপিসির বকেয়া ছয় হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের বকেয়া দুই হাজার ২৮৪ কোটি টাকা, পদ্মা অয়েল কম্পানির কাছে বকেয়া দুই হাজার ১৪৫ কোটি টাকা, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের বকেয়া এক হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের বকেয়া এক হাজার ২৮ কোটি টাকা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!