বিভিন্ন সরকারি সংস্থার স্থায়ী আমানতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও পাওনা পরিশোধ করছে না বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক। তাই আমানতের এসব টাকা আদায়ে সুনির্দিষ্ট পথনকশা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আলোচনা করে টাকা আদায়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই পথনকশা তৈরি করবে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের তথ্য তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ব্যয় নির্বাহের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত অর্থ বিভাগ থেকে ১০৫ কোটি টাকা এবং এই ফান্ডে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) বিভিন্ন শাখায় ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক বছর মেয়াদে স্থায়ী আমানত হিসেবে ৫৯৭ কোটি ৬২ লাখ টাকার বেশি রাখা হয়। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদহারে আসলসহ ব্যাংকের কাছে পাওনা ৮৭৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার বেশি। স্থায়ী আমানতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ব্যাংক টাকা নগদায়ন করছে না। এমনকি ট্রাস্টের অনুমোদন ছাড়া স্বপ্রণোদিতভাবে নবায়ন করে যাচ্ছে। কিন্তু আমানতগুলো ২০৩৮ সালে পরিশোধ করা হবে বলে পদ্মা ব্যাংক অর্থ পরিশোধের পরিকল্পনা জমা দেয়। ২০২২ সালে এই পরিকল্পনা জমার পর ২০২৩ সালে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ২০৩০ সালের মধ্যে পরিশোধের পরিকল্পনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু গত জানুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংক ৬ শতাংশ সুদহারে ৭৬০ কোটির বেশি টাকা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই আট বছর মেয়াদি ব্যাংকের প্রেফারেন্স শেয়ারে রূপান্তর করে। এ অবস্থায় উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের স্থায়ী আমানত পাওনা পরিশোধ না করায় উদ্ভূত সমস্যাসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার একই জাতীয় সমস্যা সমাধানে পথনকশা প্রণয়ন করা হবে। উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এসব টাকা কী বিবেচনায়, কে, কেন রেখেছিলেন, সেটা তদন্ত করে দেখবে প্রতিটি মন্ত্রণালয়।