শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে ১৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১৩৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মঙ্গলবারের (১০ ডিসেম্বর) সভায় এই জরিমানা করা হয়। সভা শেষে বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড বা বিডি ফাইন্যান্স, ওরিয়ন ফার্মা এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার নিয়ে কারসাজির জন্য এই জরিমানা করা হয়। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের বিভিন্ন সময়ে কোম্পানি তিনটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটে। কারসাজির মাধ্যমে কারসাজিকারকেরা এসব শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে বড় অঙ্কের মুনাফা করে।
বিএসইসির তথ্য অনুযায়ী, বিডি ফাইন্যান্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় সামির সেকান্দারকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে আবু সাদাত মো. সায়েমকে। তৃতীয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে আনিকা ফারহিনকে। এ ছাড়া আনোয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আনোয়ার গ্যালভানাইজিংকে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা, সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্সকে ৮৫ লাখ টাকা, মাহের সেকান্দারকে ৫২ লাখ টাকা, আফরা চৌধুরীকে ৩৫ লাখ টাকা, আবদুল মবিন মোল্লাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বিএসইসি জানিয়েছে, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে এসব কারসাজিকারকেরা কারসাজিতে জড়িত ছিলেন।
এ ছাড়া তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনায় এক ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন আমিনুল ইসলাম ও নাবিল ফিড মিলস। এর মধ্যে আমিনুল ইসলামকে কারসাজির ঘটনায় ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং নাবিল ফিড মিলসকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত এক মাসের কম সময়ে আইন লঙ্ঘন করে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজিতে জড়িত ছিলেন।
এর বাইরে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৬১ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি। সংস্থাটি জানায়, কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে সর্বোচ্চ ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে সোহেল আলম নামের এক ব্যক্তিকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এখলাসুর রহমান নামে অপর এক ব্যক্তিকে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বীকন ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে। এ ছাড়া রিসানা করিমকে ৬ কোটি টাকা, বীকন মেডিকেয়ারকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা, বীকন ফার্মাকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ও নুরুন নাহার করিমকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বিএসইসি জানিয়েছে, উল্লেখিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে ২০২২ সালের ২১ জুন থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটান।