ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা মো. খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে বিদেশি কলেজের ভুয়া অফার লেটার তৈরি করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণ করেছে। যার মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা টাকা ফেরত চেয়ে মানববন্ধন করেছেন।
তারা অভিযোগ করেন, বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পৃথিবীর উন্নত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নিয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও সেখানে পাঠাতে পারেনি। বিদেশি কলেজগুলোর ভুয়া অফার লেটার তৈরি করে টাকা না পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এরকম ভুক্তভোগীর সংখ্যা হাজারের বেশি। তিনি গড়ে ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তাদের দেওয়া লিস্ট অনুযায়ী ৮৫০ এর বেশি শিক্ষার্থীকে বিদেশ পাঠানো যায়নি। কিন্তু আমাদের ধারণা ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সে অনুযায়ী তিনি প্রায় মোট টাকা ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
আমির জাহেদি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। যার ফলে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়, উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন ভেঙে যায় এবং আর্থিকভাবে প্রতিটি পরিবার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে অনেক দেনদরবার করার পর পাওনা টাকার বিপরীতে বিএসবি কর্তৃপক্ষ অনেক পাওনাদারকে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মো. খাইরুল বাশারের সই করা চেক দিলেও তা ব্যাংক কর্তৃক প্রত্যাখান করেছে।
তিনি বলেন, টাকা উদ্ধারের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলে এবং পরে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে বাশারের গুন্ডাবাহিনী আক্রমণ চালায়। এছাড়া পাওনাদারদের টাকা না দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সবশেষ গত ২৭ আগস্ট পাওনা টাকা ৩ কিস্তিতে (২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর ও ২৫ নভেম্বর) পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধের দিনই গুন্ডাবাহিনী দিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা নিরুপায় হয়ে টাকা উদ্ধার ও নিরাপত্তার জন্য অনেকে জিডি, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতির মামলা করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
এখন বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ করে সব মোবাইল নম্বর বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চেয়ারম্যান খাইরুল বাশার অজ্ঞাতস্থানে আত্মগোপনে রয়েছেন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শিক্ষা জীবন রক্ষার্থে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।