রাইড শেয়ারিং বিধিমালা লঙ্ঘন করে অন্তত ৪০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে উবার-পাঠাওকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের আয়-ব্যয়ের পরিপূর্ণ হিসাব এবং বিদেশে পাঠালে কোন প্রক্রিয়ায় কত টাকা পাঠিয়েছে তাও লিগ্যাল নোটিশে জানতে চাওয়া হয়েছে। উবারের কান্ট্রি প্রধান এবং পাঠাও এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ। আগামী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, রাইড শেয়ারিং বিধিমালা ২০১৭ এর লঙ্ঘন করে বিআরটিএর অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো এ পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে উবার একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি যা পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করা হয় ভারত থেকে। বাংলাদেশে কিছু অফিস রয়েছে যার কাজ হলো মূলত অর্থ সংগ্রহ করা।প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ অন্তত এক লাখ ৫০ হাজার পরিবহন অনলাইন অ্যাপসের মাধ্যমে উবার ও পাঠাওতে সংযুক্ত রয়েছে। যারা মূলত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, ফুড ডেলিভারি ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
রাইড শেয়ারিং বিধিমালায় কোনো নির্দেশনা না থাকলেও কোম্পানিগুলো প্রতারণা করে পরিবহন ব্যাবসায়ীদের আয়ের ওপর ২৫%, ৩০% কমিশন, এ্যাডভান্স প্ল্যাটফর্ম ফি, সার্ভিস চার্জ, বুকিং ফি, ট্যাক্স ইত্যাদি নিয়ে থাকে। বিধিমালা মোতাবেক রাইডশেয়ারিং কোম্পানি এক লাখ টাকা দিয়ে বিআরটিএ থেকে এ্যনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট প্রাপ্তিসাপেক্ষে ব্যবসা করতে পারবে। অন্য কারও কাছ থেকে কোনো টাকা তারা নিতে পারবে মর্মে বিধিমালায় উল্লেখ না থাকলেও কোম্পানিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে গ্রহণ করছে যা সম্পূর্ণ আইনি ও অবৈধ। কিছু দেশীয় রাইডশেয়ারিং কোম্পানি (ইন ড্রাইভ) আছে যারা একটি টাকাও কমিশন নেয় না।
বাংলাদেশে গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ব্যাবহারকারীদের কোথাও কোনো টাকা দিতে হয় না, এসব প্রতিষ্ঠানের ও সর্বত্র হাজার হাজার কর্মচারী রয়েছে। গুগল-ফেসবুকের মতো রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো ও অনলাইন অ্যাপস পরিচালনা করে। গত ৮ বছর ধরে তারা বাংলাদেশে সরকারকে কত হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়েছে তাদের আয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তাদের আয়-ব্যয়ের পরিপূর্ণ হিসাব এবং বিদেশে পাঠালে কোন প্রক্রিয়ায় কত টাকা পাঠিয়েছে তাও লিগ্যাল নোটিশ মারফত জানতে চাওয়া হয়েছে।
একজন গাড়ির চালক যদি তিন হাজার টাকা একদিনে আয় করে সেখান থেকে অন্তত এক হাজার টাকা তারা বিভিন্ন খাত দেখিয়ে কেটে নিচ্ছে। এভাবে গত আট বছরে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার পাহাড় গড়েছে। সুতরাং এসব রাইড শেয়ারিং কোম্পানিদের এসব বে-আইনি কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।