আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মী নৃশংস হত্যার শিকার হয়েছেন। গুম করা হয়েছে অনেককে। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে ৬০ হাজার খুন হয়েছে।
সে সময় বিএনপি নেতা ইলিয়াছ আলী ও চৌধুরী আলম গুম, নারায়ণগঞ্জে সাত খুন, গাইবান্ধার সাবেক এমপি লিটন হত্যাকাণ্ড ব্যাপক আড়োলন তোলে। আবার ক্ষমতাসীন দলটির অন্তর্কোন্দলেও একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলের ১৫ বছরে (২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত) সারা দেশে কমপক্ষে ৬০ হাজার হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সে হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ৪ হাজারের মতো খুন হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী শাসনের ১৫ বছরে সারা দেশে গড়ে মাসে ৩২৯ জন খুনের শিকার হয়েছে। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন হত্যার শিকার হয়েছে ১১ জন।
নিহতদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিক, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত ১৫ বছর ৮ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে খুব একটা ভালো ছিল তা মোটেও বলা যাবে না। দীর্ঘ এই সময়কালে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ছিল দৃশ্যমান বাস্তবতা।
বন্দুকযুদ্ধের নামেও অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যেসব ঘটনায় মামলা পর্যন্ত হয়নি। আবার টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনায় মামলা হলেও খুনিরা গ্রেপ্তার হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নাটক সাজিয়ে ২ হাজার ব্যক্তিকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালে সরকার পতনের আগ পর্যন্ত কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে অন্তত ১ হাজার ৯২৬ জনকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনার পর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে একই ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
তবে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করেছে। এসবির সাত বছরের হিসাবে ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে ১ হাজার ২৯৩ জন।