Header – Before
Header – After

১২৫ কোটি টাকা লোকসানে ডেসকো

বড় অঙ্কের লোকসানের কারণে পরপর দুই বছর শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটি ১২৫ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে। এ কারণে এ বছরও শেয়ারধারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত শনিবার ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। পরে প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পর্ষদ সদস্যরা লোকসানজনিত কারণে লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে রোববার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছে লোকসান ও লভ্যাংশ না দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর শেষে ডেসকো ১২৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। তবে তা আগের বছরের তুলনায় অনেক কম। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডেসকোর লোকসানের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডেসকোর লোকসান ৩৮০ কোটি টাকা বা ৭৫ শতাংশের বেশি কমেছে।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি এই কোম্পানিটির বড় ধরনের লোকসানের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কোম্পানিটির আয়ের তুলনায় বেতন-ভাতাসহ প্রশাসনিক খরচ বেশি। এ ছাড়া সুদ পরিশোধসহ বড় অঙ্কের আর্থিক খরচ ও ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কোম্পানিটির।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করে কমিশন বাবদ ডেসকো আয় করে ৩৫৫ কোটি টাকা। এর বিপরীতে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খাতে ব্যয় হয় ৩৫৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিক্রিতে খরচ হয় আরও ৩২৫ কোটি টাকা। শুধু কর্মীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় ছিল ২৯২ কোটি টাকা। সুদ পরিশোধ ও অন্যান্য খাতে আর্থিক ব্যয় দাঁড়ায় ১৮০ কোটি টাকায়। এর বাইরে ডলারের বিনিময়মূল্য বৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটি ২৪৩ কোটি টাকার অতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এসব কারণেই কয়েক বছর ধরে বড় অঙ্কের লোকসান গুনছে ডেসকো। এই লোকসানের প্রভাব পড়েছে সাধারণ শেয়ারধারীদের ওপরও। পরপর দুই বছর তারা কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না। সর্বশেষ ২০২৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

এদিকে লভ্যাংশ না দেওয়া ও লোকসানের তথ্য প্রকাশের পর রোববার ডেসকোর শেয়ারের দরপতন ঘটে। সেদিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮০ পয়সা বা প্রায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ২১ টাকায় নেমে আসে। ৩৯৭ কোটি টাকা মূলধনের এই প্রতিষ্ঠানের ৬৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৪ শতাংশ এবং ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে প্রায় ৯ শতাংশ শেয়ার। পরপর দুই বছর লভ্যাংশ না দেওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী সোমবার থেকে সরকারি মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানকে ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে এখন থেকে ডেসকোর শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীরা কোনো ঋণসুবিধা পাবেন না। পাশাপাশি এই শ্রেণিভুক্তির কারণে শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তিতেও সময় বেশি লাগবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!