সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল), তার স্ত্রী কাশমিরি কামাল এবং দুই মেয়ে কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের আয়কর নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুদকের করা পৃথক চারটি আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক তানজিল আহমেদ।
প্রথম আবেদন বলা হয়, আসামি আ হ ম মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন, ভোগদখল এবং নামীয় ৩২টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহভাজন অর্থ লেনদেন করে তা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগে তদন্ত চলছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী থাকাকালে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জিত ৪৪ কোটি ১১ লাখ টাকা বৈধ করার উদ্দেশ্যে স্ত্রীর নামে সম্পদ ক্রয় ও দখলে রাখেন। এতে জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনে কাশমিরি কামাল স্বামীকে সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি, তার নামে খোলা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং নিজস্ব ২০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।
আরেকটি আবেদন বলা হয়েছে, মোস্তফা কামাল মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জিত ৩১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বৈধ করার লক্ষ্যে মেয়ে কাশফি কামালের নামে অর্জন এবং নিজ ভোগ দখলে রেখে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন। এছাড়া ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে সেই প্রতিষ্ঠান এবং নিজ নামে মোট ৩৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকার সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।
নাফিসা কামালের আবেদন বলা হয়েছে, বাবা মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জিত ৬২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বৈধ করার লক্ষ্যে নাফিসার নামে অর্জন এবং নিজ ভোগ দখলে রেখে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন। এ ছাড়া তিনিও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলে সেই প্রতিষ্ঠান এবং নিজ নামে মোট ১৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা জমা ও উত্তোলনের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ও তদন্তাধীন রয়েছে।
আবেদনগুলোতে আরও বলা হয়, মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের আয়কর নথির স্থায়ী অংশ, বিবিধ অংশ ও এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন (যদি থাকে) ও নোটসিটসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি এবং অফিস আদেশের অংশ সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
** সাবেক অর্থমন্ত্রীর মেয়েসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
** পাচারের টাকায় বিদেশে ‘কামাল পরিবারের’ সাম্রাজ্য
** ১১২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: কামালসহ ১২ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা
** কামালের পরিবারের ১৬৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

