Header – Before
Header – After

‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে একীভূত ৫ ব্যাংক

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুরুতর দুর্বল হয়ে পড়া পাঁচ ইসলামি ব্যাংক একীভূতকরণ ও নতুন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন পেয়েছে। বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে।

একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচটি বেসরকারি ইসলামি ব্যাংকের নতুন নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে—‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। এই নামেই নতুন ব্যাংক গঠন করা হবে। পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও দায়দেনা একত্র করে নতুন ব্যাংকের নামে হস্তান্তর করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং সরকারের পক্ষে অর্থ বিভাগের অর্থই নতুন ব্যাংকের মালিক হবে। প্রথমে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ নামে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া হবে, এরপর যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্ম থেকে কোম্পানির নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নতুন ব্যাংকের ব্যবসা লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হবে, জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে।

ব্যাংকগুলো হচ্ছে-ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। এসব ব্যাংক এখন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। পাশাপাশি অন্যান্য দৈনন্দিন কার্যক্রমও চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ কারণে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে নতুন একটি বড় ইসলামি ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ার শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক নাম রাখার প্রস্তাব করেছিল। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নতুন ব্যাংকের প্রস্তাবিত নাম হিসাবে এই নামই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক নামের পাশাপাশি নতুন আরও একটি নাম প্রস্তাব করে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। শেষ পর্যন্ত এই নামটিই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, নতুন ব্যাংক গঠনের জন্য প্রাথমিকভাবে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকার মূলধন প্রয়োজন হবে। তবে প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের মূলধন অনেক বেশি হবে—পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অনুমোদিত মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা। মূলধনের দিক থেকে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হবে, যেখানে অন্য কোনো ব্যাংকের এত বেশি পরিশোধিত মূলধন নেই। এর মধ্যে সরকার থেকে দেওয়া হবে ২০ হাজার কোটি টাকা, যার ১০ হাজার কোটি নগদ এবং বাকি ১০ হাজার কোটি সুকক বন্ড বিক্রি করে সংগ্রহ করা হবে। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আমানত সুরক্ষা তহবিল ও করপোরেট আমানতকারীদের শেয়ার দিয়ে সংগ্রহ করা হবে। তবে নতুন ব্যাংকের মূলধনের বড় অংশই ব্যয় হবে আমানতকারীদের বকেয়া অর্থ পরিশোধে। এর মধ্যে ২ লাখ টাকার পরিমাণ পর্যন্ত আমানত সুরক্ষা তহবিল থেকে দেওয়া হবে, বাকি অর্থ পর্যায়ক্রমে প্রদান করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। এ কারণে সরকারি মালিকানায় নতুন ব্যাংক হলে এতেও মানুষ নতুন করে আমানত রাখতে উৎসাহিত হবে। আমানত প্রবাহ বেড়ে গেলে ব্যাংকের তহবিলের কোনো ঘাটতি হবে না। এছাড়া প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সংগ্রহ বাড়ানোর জন্যও ব্যাংক থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!