মোস্তফা কামালের পেঁপে চাষে আয় ১০ লাখ টাকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজিপুর গ্রামের মো. মোস্তফা কামাল বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি কৃষিকাজেও অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন। প্রায় চার বছর আগে অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে পেঁপে চাষ শুরু করেন। প্রথমে অল্প জমিতে বিভিন্ন জাতের পেঁপে গাছ লাগিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করেন। পরিশ্রম ও সঠিক যত্নের ফলে কয়েক মাসের মধ্যে গাছগুলো ফল দিতে শুরু করে।

প্রথম মৌসুমেই ভালো ফলন ও বাজারমূল্য পেয়ে উৎসাহিত হন তিনি। বর্তমানে মোস্তফা কামালের ১ একর জমিতে পেঁপে চাষ হচ্ছে। পাশাপাশি বাগানেই ঘেরে মাছ চাষ করে সফলতার দেখা পেয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকায় করছেন বাগান। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছরে পেঁপে আবাদ হয়েছে ১০৪ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছে ২০ টন।

মোস্তফা কামালের পেঁপে বাগান ঘুরে দেখা গেছে, তার বাগানে আছে প্রায় ৫ শতাধিক পেঁপে গাছ। প্রতিটি গাছের নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত ঝুলছে ছোট-বড় অসংখ্য পেঁপে। পেঁপে চাষের পাশাপাশি বাগানের মাঝেই করেছেন মাছের ঘের। সেখানে পাঙাশ, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেছেন। অধ্যাপক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শিক্ষকতা আমার পেশা, কৃষিকাজ আমার ভালোবাসা। অবসরকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় হচ্ছে। পরিবারেও আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ১০ লাখ টাকা আয় হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও বরিশাল শহর এবং ঢাকায় সরবরাহ করছি। নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অনেকের বেকারত্ব দূর করেছি।’

তিনি বলেন, ‘বাগানেই এখন প্রায় ১০ জন লোক নিয়োজিত আছেন। তারা সিফট অনুযায়ী দিনে-রাতে কাজ করছেন। তাদের প্রত্যেককে ৮-১২ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়।’ ভবিষ্যতে পেঁপের পাশাপাশি মাল্টা ও ড্রাগন ফলের চাষ করার ইচ্ছা আছে মোস্তফা কামালের। তিনি বিশ্বাস করেন, ‘যদি কেউ নিষ্ঠা আর পরিশ্রম নিয়ে কাজ করেন, তবে কৃষিই হতে পারে উন্নতির বড় মাধ্যম।’

বরিশাল কৃষি অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট এস এম নাহিদ বিন রফিক বলেন, ‘মোস্তফা কামালের মতো শিক্ষিত মানুষ কৃষিতে যুক্ত হওয়ায় তরুণ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। তার পেঁপে বাগান এখন অনেকের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি অনেক ভালো ফলন পাচ্ছেন। অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!