Header – Before
Header – After

মিথ্যা ঘোষণায় আনা কোটি টাকার পণ্য আটক

বেনাপোল স্থলবন্দর

মিথ্যা ঘোষণাসহ ভারত থেকে আনা তিনটি ট্রাকে থাকা প্রায় ১ কোটি টাকার ১১ লাখ পিচ ব্লেডসহ বিভিন্ন পণ্য বেনাপোল স্থলবন্দরের ভেহিকেল টার্মিনালে ২৫ দিন আটকে থাকার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকালে বেনাপোল কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার সাকিব রায়হানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল বন্দরের ৪২ নম্বর শেডে পণ্য আনলোড ও পরীক্ষা করে এসব জব্দ করেছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২৮ সেপ্টেম্বর মেসার্স আশিকুল ইসলাম অ্যান্ড সন্স নামের এক আমদানিকারক ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ৩০ হাজার ৮৩৮ কেজি ওজনের ‘স্টিল আইটেম অ্যান্ড আদার্স’ আনার ঘোষণা দেন। মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানির পর বন্দর থেকে খালাসের চেষ্টা করেন সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট মেসার্স হুদা ইন্টারন্যাশনাল। ঘোষণায় উল্লেখিত স্টিল পণ্যের মধ্যে পাওয়া গেছে ১০ লাখ ৮০ হাজার পিস ব্লেড ও অতিরিক্ত তিনটি প্যাকেজে ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য। এতে সরকারের প্রায় কোটি টাকার রাজস্বের ক্ষতি হতে যাচ্ছিল।

বেনাপোল বন্দরের ৪২ নম্বর শেডের ইনচার্জ আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, রেকর্ড অনুযায়ী ট্রাকগুলোতে ‘স্টিল আইটেম অ্যান্ড আদার্স’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে সরকারি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, মূল ডকুমেন্ট পরে পরিবর্তন করে জাল নথিতে ৯ লাখ ব্লেড দেখানো হয়। কিন্তু অতিরিক্ত ১০ লাখ ৮০ হাজার পিস ব্লেড পাওয়া যায়। কাস্টমসের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে অনিয়ম করতে সক্ষম হয়েছেন।

সাধারণ ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান জানান, এনএসআইয়ের সুনির্দিষ্ট তথ্যে এমন জালিয়াতি ধরা পড়লেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ২৫ দিনের দীর্ঘ নীরবতা ও বিলম্বে পরীক্ষণ নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। এখানে কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ২৫ দিন ধরে আমদানিকারককে সময় দিয়েছেন পুরোনো নথি গায়েব করে নতুন নথি তৈরির জন্য। তিনি আরও বলেন, বেনাপোলের এই ঘটনা কেবল একটি নয়। এরকম অহরহ হয়ে থাকে। এটি কাস্টমস প্রশাসনের ভেতরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বহুদিনের অনিয়ম, দুর্বলতা ও দায়হীনতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি, যা সরকারের রাজস্ব নিরাপত্তার জন্য বড় সতর্ক সংকেত।

এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকের ফেলে পালিয়ে যাওয়া ট্রাকটি এখনো তল্লাশি করে তার তথ্য প্রকাশ করেনি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে কাস্টমসের ন্যায়-নীতি নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ী মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, জব্দ করা ভারতীয় পণ্য বোঝাই অবৈধ চালানটি কাস্টমস বন্দরের হেফাজতে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। তারা চাইলে ট্রাকটি খুলে দেখতে সহযোগিতা করবে বন্দর। অবৈধ পণ্য চালানের পাচার ঠেকাতে গত ১৬ অক্টোবর থেকে বন্দরে দুই জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!