ভিসা জালিয়াতিতে ভারত-বাংলাদেশ, উদ্বিগ্ন কানাডা

ভারত ও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া জালিয়াতিপূর্ণ ভিসা আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পার্লামেন্টের কাছে বিপুল সংখ্যক ভিসা একসঙ্গে বাতিল করার ক্ষমতা চাইছে কানাডা সরকার। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসি নিউজ গোপন সরকারি নথির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। সিবিসির হাতে আসা নথি অনুযায়ী, কানাডার অভিবাসন বিভাগ ও বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সহযোগীর সঙ্গে মিলে সন্দেহজনক ভিজিটর ভিসা আবেদন শনাক্ত ও বাতিল করার জন্য কাজ করছে।

দেশটির অভিবাসন মন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থাপিত একটি বিভাগীয় প্রেজেন্টেশনে ভারত ও বাংলাদেশকে ‘দেশভিত্তিক চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার সিবিসিকে বলেছেন, সরকার কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে মূলত মহামারি বা সংঘাতের মতো জরুরি পরিস্থিতিতে এই ক্ষমতা ব্যবহার করতে চায়।

প্রেজেন্টেশনে বলা হয়েছে, এই ধরনের ক্ষমতা মহামারি, যুদ্ধ বা নির্দিষ্ট কোনো দেশের ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে উদ্ভূত কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হতে পারে। এই প্রস্তাবটি বিল সি-১২ তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা কানাডার সীমান্ত ও অভিবাসন ব্যবস্থা সংস্কারের একটি বৃহত্তর আইনের অংশ। অটোয়া পার্লামেন্টকে দ্রুত এই বিল পাস করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে, কারণ সরকারের মতে এটি নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলা এবং ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধে জরুরি।

সিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কানাডার কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে আসা জালিয়াতিপূর্ণ ভিসা আবেদনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন। নথি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মে মাসে ভারতীয় নাগরিকদের আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা যেখানে মাসে ৫০০ এরও কম ছিল, তা ২০২৪ সালের জুলাই নাগাদ বেড়ে প্রায় ২,০০০ এ দাঁড়িয়েছে। এই উদ্বেগের কারণে ভারতের অস্থায়ী আবাসিক ভিসা আবেদন যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হয়েছে। এর ফলে ভিসা প্রসেসিংয়ের সময়ও বেড়েছে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি যেখানে ৩০ দিন সময় লাগত, এক বছর পর তা বেড়ে ৫৪ দিনে দাঁড়িয়েছে।

একই সঙ্গে ভিসা অনুমোদনের সংখ্যাও কমেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে ৬৩ হাজারেরর বেশি ভিসা অনুমোদিত হয়েছিল, জুন নাগাদ সেই সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজারে নেমে আসে। এ বিষয়ে অভিবাসন বিভাগ সিবিসিকে জানিয়েছে, নতুন এই ক্ষমতার উদ্দেশ্য কোনো নির্দিষ্ট জাতীয়তাকে লক্ষ্যবস্তু করা নয়। বিভাগটি জোর দিয়ে বলেছে, প্রতিটি সিদ্ধান্ত কানাডার আইন অনুযায়ী নেওয়া হবে।

বিভাগটি আরও জানায়, ভিসা জালিয়াতি ও অবৈধ সীমান্ত পারাপার রোধে কানাডা ইতোমধ্যে ‘বাস্তব পদক্ষেপ’ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সেইসব দেশ থেকে আসা আবেদনকারীদের ভিসা আরও কঠোরভাবে যাচাই করা, যেসব দেশে ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারের হার বেশি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!