সরকারি চাকরি করার সময় শুল্কফাঁকি, ঘুষ ও দুর্নীতি করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রংপুরের সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মিয়া ও তার ছোট ভাই মো. শাহজাদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মোহাম্মদ নাজির এ পরোয়ানা জারি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ কে এম হারুন উর রশিদ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও মামলা সূত্রে জানা যায়, দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় রংপুরের উপসহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রুবেল হোসেন গত ২৬ সেপ্টেম্বর রংপুরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আজ রোববার আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মোহাম্মদ নাজির শুনানি শেষে অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মিয়া ও তার ভাই মো. শাহজাদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কাস্টমসে চাকরি করার সময় দুর্নীতি করে আলাউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালে একব্যক্তি দুদকে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রংপুর দুদকের কর্মকর্তারা ছায়া তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পায়। ২০২৩ সালের ১৬ মে দুদকের সমন্বিত কার্যালয় রংপুরের উপসহকারী পরিচালক নূরে আলম সিদ্দীক বাদী হয়ে আলাউদ্দিন মিয়া ও তার ভাই শাহজাদার বিরুদ্ধে মামলা করেন। আলাউদ্দিন মিয়া আয়কর রিটার্নে ২০১৭-১৮ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত সম্পদ অর্জন ও দায় দেনা নেই মর্মে ঘোষণা করেছেন।
তাতে দেখা যায়, তার আয়কর রিটার্ন দাখিলে তিনি সত্য গোপন করেছেন। এ সময়কালে তার সম্পদের খোঁজ করে দুদক আলাউদ্দিন মিয়ার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৭ হাজার ৩০৮ টাকা সম্পদর অর্জনের সত্যতা পেয়েছে। একইভাবে তার ভাই মো. শাহাজাদা আয়রকর রিটার্ন ২০১৭-১৮ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত মোট আয়ের সঙ্গে মোট অর্জিত সম্পদের গড়মিল খুঁজে পায় দুদক। শাহাজাদার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯৪ টাকা, যা তিনি তার ভাই মো. আলাউদ্দিন মিয়ার কাছ থেকে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক নিশ্চিত হয়েছে।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন অভিযোগর উল্লেখ করেছেন, আলাউদ্দিন মিয়া চাকরিকালীন শুল্কফাঁকি দিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ অর্জন করেছেন বলে তদন্তকালে প্রতীয়মান হয়েছে, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
***