বাংলাদেশের বাজেট নথিতে তথ্যের ঘাটতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আটটি সুপারিশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের কাঠামো অনুসরণ করে বাজেট প্রণয়ন করেছে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
আগের সরকার নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব এবং গৃহীত বাজেট সবার জন্য প্রকাশ করেছে এবং অনলাইনে উপলব্ধ করেছে। তবে অর্থবছরের শেষের হিসাব প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ে সবার জন্য প্রকাশ করা হয়নি। সাধারণভাবে বাজেটের তথ্য নির্ভরযোগ্য হলেও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয়নি। ‘২০২৫: আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন: বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই প্রতিবেদন শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেটে ঋণের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হতো এবং সরকারের পরিকল্পিত ব্যয় ও রাজস্বের যৌক্তিক চিত্র দেওয়া হতো। তবে বাংলাদেশ সরকার নির্বাহী বিভাগের ব্যয়ের তালিকা তৈরি করেনি এবং বাজেটে রাজস্ব ও ব্যয়ের সম্পূর্ণ চিত্র প্রকাশিত হয়নি।
বাজেট নথিতে আর্থিক বরাদ্দ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় প্রদর্শিত হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের কারণে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের হিসাব পর্যালোচনা করতে পারেনি এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাতন্ত্র্য প্রদর্শন করেনি। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের চুক্তি ও লাইসেন্সে আইন মেনে চলা হলেও সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে তথ্য সীমিত ছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের সব প্রক্রিয়া উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করেছে এবং আগের সরকারের গৃহীত ও চলমান সব সরাসরি ক্রয় আলাপ-আলোচনা স্থগিত করেছে।
এ অবস্থায় আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পরামর্শ হল-
** বছর শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আর্থিক প্রতিবেদন সবার জন্য প্রকাশ করা।
** আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বাজেটের নথি তৈরি করা।
** বাজেটে নির্বাহী বিভাগের জন্য ব্যয়ের চিত্র আলাদাভাবে দেখানো।
** বাজেটে সরকারের রাজস্ব ও ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরা।
** আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরীক্ষা সংস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বাজেটের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরাসরি পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
** নিরীক্ষা প্রতিবেদন সময়মত প্রকাশ করা। সেখানে সুপারিশসহ বিস্তারিত তথ্য রাখা।
** প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের মূল তথ্য প্রকাশ করা।
** সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি ও তথ্য প্রকাশ করা।

