ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের একাধিক বৈঠক হয়েছে, তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দাম বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি জানান, সরকার ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি করেনি। এর আগে সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি বিজ্ঞপ্তিতে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। মঙ্গলবার রাজধানীর পূর্বাচলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা পুনর্ব্যক্ত করেন, সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া দাম বাড়ানোর এখতিয়ার ব্যবসায়ীদের নেই।’ এ সময় ব্যবসায়ীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি ভোজ্যতেলের দামের তারতম্য ঘটে তবে সরকার প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ব্যবহার করবে।’
ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ছয় টাকা ও খোলা সয়াবিনের দাম তিন টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়। এর ফলে সয়াবিন তেলের লিটারের বোতল ও প্যাকেটের দাম ১৮৯ থেকে বেড়ে ১৯৫ টাকায় দাঁড়ায়; পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৩০ টাকা বেড়ে ৯৪৫ টাকা করা হয়। আর খোলা সয়াবিনের দাম ১৭৪ থেকে ১৭৭ টাকা ও পাম তেলের দাম ১৫০ থেকে বেড়ে ১৬৩ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়।
ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণকে কেন্দ্র করে গত আগস্টে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে ১০ টাকা মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দেন, কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক টাকার বেশি বাড়াতে রাজি হয়নি। গত সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আবারও বৈঠক হয়। বৈঠকে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়, তবে মন্ত্রণালয় এই মূল্যবৃদ্ধির অনুমোদন দেয়নি। এর আগে ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে সর্বশেষ সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা এবং বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৯২০ টাকা করা হয়। অবশ্য আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এসে খোলা পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়।
আগস্টে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন, তবে তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেবল এক টাকা বৃদ্ধি করতে অনুমতি দেয়। এ নিয়ে মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরপর গত ২২ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সরকার সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তবে কবে ও কত বাড়ানো হবে তা তখন নির্ধারিত হয়নি। আজ পুনরায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।

