শনিবার (১৭ মে) টানা তৃতীয় দিনের মতো চলছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি। এতে দেশের আমদানি বাণিজ্য ও রাজস্ব খাতের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোরের বেনাপোলসহ দেশের প্রায় সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক-কর কার্যালয়ে কার্যত কোনো কাজ হচ্ছে না। এতে আমদানি-নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে ভোগান্তি বাড়ছে। সকালে ঢাকা কাস্টমস হাউসে কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির ছিল। রাজধানীর অন্যান্য ভ্যাট ও কর কার্যালয়েও তেমন কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি। তবে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী যথারীতি অফিসে উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির উদ্দেশ্যে জারি করা অধ্যাদেশের প্রতিবাদে রাজস্ব খাতে কলমবিরতি পালন করছে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারের ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার (১৭ মে) তৃতীয় দিনের মতো সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ঈদের ছুটি সমন্বয়ের কারণে সরকারি সিদ্ধান্তে শনিবার (১৭ মে) সব অফিস খোলা থাকায় কলমবিরতিও চলছে। আজকের এই কর্মসূচিই ছিল ঘোষিত ধারাবাহিক কর্মসূচির শেষ দিন। বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে সংগঠনটি।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্তির উদ্দেশ্যে প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল, এনবিআর সংস্কারসংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ, এবং এনবিআর, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার প্রক্রিয়া চালু করা। গত বৃহস্পতিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সারা দেশের কাস্টমস, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়গুলোতে চলমান কলমবিরতির মধ্যেও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম—আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট এবং রপ্তানি—চালু রাখা হয়েছে। গত সোমবার রাতে একটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং তার পরিবর্তে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআরের আওতাধীন সব কর অঞ্চল, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত মঙ্গলবার থেকে কলমবিরতি কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

