আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে পর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাঁর ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হলো।
ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের চিঠিতে তাঁর মা–বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং জন্ম তারিখও উল্লেখ করা হয়েছে। লেনদেন স্থগিতের পাশাপাশি সব ব্যাংক হিসাবের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি তথ্য বিএফআইইউর কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ওবায়দুল কাদেরকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। কোটা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ১৫ জুলাই তিনি হুমকি দিয়েছিলেন যে ‘জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগ প্রস্তুত’ রয়েছে। এর পরই আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপরে ছাত্রলীগ চড়াও হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন মুহাম্মদ ইউনূসের ওই বিবৃতিকে রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাবেক সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেই সঙ্গে অনেক মন্ত্রী-এমপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ওবায়দুল কাদেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে দেশের অনেক স্থানে মামলা দায়ের হয়েছে।