এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা মোট ৪৬৯ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২০ অক্টোবর এস আলমের মালিকানাধীন ১০৫টি কোম্পানির মোট ৫১৩ কোটি ১৮ লাখ ৩২ হাজার ২৮২ টাকার শেয়ার অবরুদ্ধের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া, গত ১০ জুলাই সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলের নামে সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসাব ও কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশও দেওয়া হয়েছিল।
দুদকের তথ্যানুযায়ী, সিঙ্গাপুরের তিনটি পৃথক ব্যাংকে ১৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া পাঁচটি ইনস্যুরেন্সে কোম্পানিতে ১৭টি হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ হয়। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের আটটি কোম্পানিতে থাকা এস আলমের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে এস আলমের ছেলে আশরাফুল আলমের পাঁচটি ব্যাংক হিসাব ও একটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে সাইফুল আলমের আরেক ছেলে আহসানুল আলমের নামে থাকা একটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে, গত ২৪ জুন এস আলম ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এর আগে ১৭ জুন এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে থাকা ১৮০ কোটি টাকার জমি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়। আরও আগে, ২৭ এপ্রিল একই ব্যক্তিদের নামে থাকা ৫৫৯ কোটি টাকার জমি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া ২৩ এপ্রিলও এস আলম ও তাঁর সহযোগীদের নামে থাকা আরও কিছু জমি ক্রোকের আদেশ জারি করা হয়।
দুদক আদালতকে জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে তাঁরা দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। দুদক তার অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তিরা এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন। এর আগে গত ১০ মার্চ এবার এস আলম গ্রুপের আরও স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
গত ১৪ জানুয়ারি মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, ভবনসহ ২০০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান ও ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
** এস আলমের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
** এস আলমের অ্যাকাউন্টে ২.৪২ লাখ কোটি টাকার লেনদেন
**এস আলম গ্রুপের ৫১০৯ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ
**এস আলম : ২ এলসিতেই পাচার ১০ হাজার কোটি টাকা
**পাচার করে ১৮ কোম্পানিতে এস আলমের বিনিয়োগ
**এস আলমের সেই দুই প্রতিষ্ঠানের বিন লক, হিসাব জব্দ
**এস আলম: আমদানি না করেই পাচার ১৬ কোটি টাকা
** এস আলমের জামাতা হাতিয়েছেন ৩৭৪৫ কোটি টাকা
** এস আলমের স্টিল, তেল মিল ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নিলামে
** এস আলমের পিএসের হিসাবে ১২৬৬ কোটি টাকা
** এস আলমের ১৭৫০ কোটি খেলাপি ঋণে বাড়তি সুবিধা
** ফার্স্ট সিকিউরিটিতে থেকে লুট ৩৮ হাজার কোটি

