জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের আয়কর রিটার্ন ফাঁস করার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টবর) রমনা থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, কারও নাম উল্লেখ না করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার এজহারে ফেসবুক পেজের একটি লিংক দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ আয়কর বর্ষের রিটার্নের তথ্য প্রকাশ করেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রিটার্নের তথ্য প্রকাশ করে বেশ কিছু অসঙ্গতিও তুলে ধরেন।
এদিকে চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের রিটার্ন প্রকাশিত হলে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে তোলপাড় তৈরি হয়। সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে কর অঞ্চল-৪ এ ওইসব করবর্ষের আয়কর রিটার্ন জমা দেন আবদুর রহমান খান। অবশ্য যে তিন করবর্ষের আয়কর রিটার্নের তথ্য ফাঁস হয়েছে ওই সময় তিনি এনবিআর চেয়ারম্যান ছিলেন না। গত বছরের ১৫ আগষ্ট আবদুর রহমান খানকে সরকার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভোগের সচিব এবং এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেন।
চলতি বছরের মে মাসে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে, যার মাধ্যমে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠিত হয়। অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের চাপের কারণে অধ্যাদেশে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। তবে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবির পাশাপাশি একটি পর্যায়ে চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিও উঠে। এই দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা রাজস্ব ভবনে চেয়ারম্যানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, কলমবিরতি, অবস্থান ধর্মঘট এবং “মার্চ টু এনবিআর” কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারীরা আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া অন্যান্য সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। সরকারের কঠোর অবস্থান ও আন্দোলনকারীর পাশাপাশি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলার ঘোষণার পর ২ জুন আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পর আন্দোলনে যুক্ত অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয় বা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। পাশাপাশি অনেককে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

