Header – Before
Header – After

আত্মসাতের ৪৫০০ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে মানববন্ধন

ফারইস্ট ইসলামী লাইফের আত্মসাৎ ৪৫০০ কোটি টাকা ফেরত ও দায়ীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেকের শাস্তি দাবি করেন। এসময় দুদকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে থাকা সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের শাস্তি ও অর্থ উদ্ধারের দাবিতে দুদকে স্মারকলিপিও দেন ক্ষুব্ধ কর্মীরা। মানববন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির সিইও কামরুল হাসান বলেন, আমরা আত্মসাৎ হওয়া টাকা ফেরত চাই।

রিকভারি সেকশনের ইনচার্জ মাসুদ বলেন, নজরুল-খালেকরা নজিরবিহীন লুটপাটের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে শেষ করে দিয়েছে। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানরা টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে। তারা আইনের ফাঁকফোকর গলে বের হয়ে যাচ্ছে। একটা ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে। আর আমরা সুবিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। প্রতিষ্ঠানটির আইন কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছি, দুদকে অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা দুদককে ধন্যবাদ জানাই যে দুর্নীতিবাজ নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রাহক ও কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গ্রাহকদের অবদানে ফারইস্ট লাইফের তহবিলে জমা হয় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেক নিজেদের লোক বসিয়ে ভুয়া খরচ, কাগুজে বিনিয়োগ ও ম্যানেজমেন্ট কারসাজির মাধ্যমে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেন, যার বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ। এর ফলে ৪০ লাখ গ্রাহক প্রাপ্য অর্থ না পেয়ে প্রতিদিন অফিসে গিয়ে আহাজারি করছেন।

গত ২৩ অক্টোবর ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামকে কোম্পানির সম্পদ ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমানের আবেদনক্রমে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। উল্লেখ্য, ৩১ জুলাই দুদক কোম্পানির সম্পদ ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ও এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সংস্থাটির উপ-পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির মামলাটির বাদী হন।

মামলার আসামিরা হলেন– ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক পরিচালক তাসলিমা ইসলাম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্লাহ, সাবেক পরিচালক আলহাজ মো. হেলাল মিয়া, শাহরিয়ার খালেদ, নাজনীন হোসেন, খন্দকার মোস্তাক মাহমুদ, ডা. মো. মনোয়ার হোসেন, কে এম খালেদ, এম এ খালেক ও তার স্ত্রী সাবিহা খালেক, তাদের মেয়ে সারওয়াৎ খালেদ সিমিন, সাবেক পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, মো. মোজ্জাম্মেল হোসেন ও রাবেয়া বেগম, সাবেক বিকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. ইফফাৎ জাহান, সাবেক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর ডা. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও কাজী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সেক্রেটারি সৈয়দ আব্দুল আজিজ, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার গোলাম কিবরিয়া ও সাবেক শাখা ম্যানেজার এস এম মোর্শেদ, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার আমির মো. ইব্রাহিম, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মো. আজহার খান ও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. সোহেল খান।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে ৩৩.৫৬ শতাংশ জমিসহ ভবন ২০৭ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে স্থানান্তর করে অবৈধ উৎস গোপনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

** ফারইস্ট ইসলামী লাইফের চেয়ারম্যান গ্রেফতা
** ফারইস্টের ৪৫ কোটি আত্মসাৎ, আসামি ১৪ জন
** আড়াই লাখ গ্রাহকের ১৬০০ কোটি টাকা আটকে
** ছয় বিমা কোম্পানির ৩,৭৩৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!