অবসরে যাওয়ার প্রায় এক যুগ পর কাস্টমসের সাবেক এক সহকারী কমিশনার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুটি মামলারই বাদী হলেন কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম। দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা হলেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা দক্ষিণ এর সাবেক সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী আসমা সুলতানা।
আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার সম্পদ অর্জন এবং তা ভোগদখলের অভিযোগ আনে দুদক। অন্যদিকে আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগ আনা হয়েছে। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমসের একজন পরিদর্শক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১২ সালে তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার হিসেবে অবসরে যান। তিনি চট্টগ্রামেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের দুদক কার্যালয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়।
দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি মামলায় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনারকে আসামি করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক আইনের একই ধারায় আরেকটি মামলা হয়েছে সাবেক ওই কর্মকর্তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় অসাধু উপায়ে অর্জিত টাকায় তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন ও তা ভোগদখলে রাখতে সহযোগিতা করেছেন।
সম্পদ বিবরণীতে আহসান হাবিব নিজ নামে মাত্র ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৫০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। আর আসমা সুলতানা তাঁর নিজের নামে ২০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করলেও কোনো অস্থাবর সম্পদ নেই বলে সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা দেন। তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করলেও দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
