Header – Before
Header – After

অবৈধ মোবাইল বন্ধে এনইআইআর চালু হচ্ছে

দেশে অবৈধভাবে আমদানি করা, নকল ও চোরাই মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধে সরকার নতুনভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) যৌথভাবে কাজ করছে। আগামী ২৯ অক্টোবর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, জাতীয় পর্যায়ে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালুর প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, ‘নভেম্বরের পর যেকোনো সময় এনইআইআর কার্যকর হবে। একটি নির্দিষ্ট তারিখের আগে সব আইএমইআই নম্বর ‘গ্রে’ হিসেবে গণ্য হবে, আর পরবর্তী নম্বরগুলো ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ক্যাটাগরিতে আসবে।’ দ্রুত সময়ের মধ্যে এনইআইআর চালু ও এর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে ১০ কোটি টাকা সহায়তা এবং সংশ্লিষ্ট খরচ বহনের প্রস্তাব দিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিটিআরসি ইতিমধ্যে এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে।

এনইআইআর চালুর বিষয়ে বিটিআরসির সর্বশেষ কমিশন সভায় এসব আলোচনা হয়। বিটিআরসির সেই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ‘এমআইওবির কিছু প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে কম দামে হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বিক্রয় এবং হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য এনইআইআর সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ এবং যথাসময়ে চালুর লক্ষ্যে আনুমানিক ১০ কোটি টাকা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট/ট্যাক্সসহ স্বেচ্ছায় শর্তহীনভাবে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার ক্রয় এবং প্রযোজ্য খাতসমূহের ব্যয় নির্বাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে মর্মে জানিয়েছে।’

প্রতিটি মোবাইল ফোনের জন্য থাকে স্বতন্ত্র ১৫ সংখ্যার আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি ফোনের অবস্থান মোবাইল নেটওয়ার্কে শনাক্ত করা সম্ভব। তবে বাংলাদেশে এই আইএমইআই নম্বর নকল করে অবৈধভাবে মোবাইল ব্যবহার করার প্রবণতা অনেক বেশি। রবির ২০২৪ সালের জুন মাসের তথ্যমতে, একটি মাত্র আইএমইআই নম্বরের নিবন্ধনের আওতায় দেড় লাখেরও বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে—অর্থাৎ এসব ফোন নকল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এনইআইআর ব্যবস্থা চালু হলে ডুপ্লিকেট আইএমইআই ব্যবহারের মাধ্যমে নকল মোবাইল ফোনের আমদানি ও বিক্রি বন্ধ হবে।

সূত্র বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেদার অবৈধ মোবাইল বিক্রি হচ্ছে। এসব অবৈধ ফোন ব্যবহার করে অপরাধের প্রবণতা রয়েছে। এমআইওবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার ৩৫-৪০ শতাংশ। অবৈধ ও চোরাই হ্যান্ডসেটের কারণে দেশে ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ১৭ মোবাইল হ্যান্ডসেট কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে বৈধভাবে আমদানিকারকেরাও ক্ষতির মুখে পড়ছেন। শুল্ক হারাচ্ছে সরকার।

অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধে ২০২১ সালের ১ জুলাই প্রথমবারের মতো এনইআইআর ব্যবস্থা চালু করে সরকার। সে সময় অনেক মোবাইল ফোন সেট নিবন্ধনও করা হয়। কিন্তু এরপর তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে আবারও এনইআইআর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ১৮ জানুয়ারি বিটিআরসি ঘোষণা দেয়, ‘অতি শিগগির অবৈধ মোবাইল নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা হবে।’ কিন্তু তখনো তা কার্যকর হয়নি।

বিটিআরসি মনে করে এনইআইআর চালু হলে অনলাইনে অর্থনৈতিক প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা হবে। সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, ‘একটা সিম ফেলে দেওয়া যায় কারণ সেটি সস্তা, কিন্তু ফোন ফেলে দেওয়া যায় না। এনইআইআর চালু হলে মোবাইলের সঙ্গে থাকা সিমও বদলালে রিরেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন হবে — অর্থাৎ স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে।’

** মোবাইল বিক্রির সঠিক হিসাব রিটার্নে দেখায় না ‘রিয়েলমি’
** মোবাইল বিক্রির সঠিক হিসাব রিটার্নে দেখায় না ‘অপো’
** দেশের ৭২ শতাংশ পরিবারে পৌঁছেছে স্মার্টফোন
** শুল্ককর ছাড়াই বছরে একটি নতুন মোবাইল আনা যাবে
** দেশের তিন-চতুর্থাংশ পরিবারের হাতে স্মার্টফোন
** মোবাইলের রোমিং বিল দেওয়া যাবে টাকায়
** সচল ১৯.৫৫ লাখ আইফোন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে
** স্যামসাংয়ের দেড় কোটি ফোন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে
** অবৈধ হ্যান্ডসেটে রাজস্ব হাওয়া দুই হাজার কোটি
** ৪ প্রতিষ্ঠানের এক এমডি, করছেন করফাঁকি-অর্থপাচার
** অ্যাপল গেজেট: রিটার্ন দেয় না, ভ্যাট ফাঁকি ৪৭ কোটি টাকা
** মিথ্যা ঘোষণায় যন্ত্রাংশ আমদানি করে ‘টেকনো-ইনফিনিক্স’
** রেয়াতি সুবিধার অপব্যবহার শীর্ষে সিম্ফনি-অপো
** ভ্যাট ফাঁকিতে ‘অপ্রতিরোধ্য’ গ্যাজেট এন্ড গিয়ার

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!